আপনি জানেন কি?হাইলাইটস

ব্রিকস সম্মেলনের আগে জেনে নিন কিছু তথ্য

 দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের সান্দতান কনভেনশন সেন্টারে আসন্ন বিক্রস সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই কনভেনশন সেন্টারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন একজন। ছবি : এএফপি
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের সান্দতান কনভেনশন সেন্টারে আসন্ন বিক্রস সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই কনভেনশন সেন্টারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন একজন। ছবি : এএফপি

পাঁচ দেশের একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা এই পাঁচ দেশের আদ্যক্ষর অনুযায়ী ব্রিকসের নামকরণ হয়েছে।  তিন দিন বাদে আগামী মঙ্গলবার (২২ আগস্ট)  দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হবে এই জোটের সম্মেলন। গোটা বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৩ শতাংশই ব্রিকস জোটের সদস্য দেশগুলোর। পাশাপাশি বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশই এই দেশগুলোর অধিবাসী। পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক আধিপত্যকে খর্ব করতে চাইছে পাঁচ দেশের এই জোট। ব্রিকস সম্পর্কে তাই কৌতুহলের শেষ নেই। জেনে নিন আরও কিছু তথ্য, যা তুলে ধরা হয়েছে এএফপির এক প্রতিবেদনে।

নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা

বিশ্বের উদীয়মান কয়েকটি দেশের একটি গ্রুপ ব্রিকস ২০০৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিবছর বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেয় গ্রুপটির সদস্যরা। সদস্য দেশগুলোতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে জোটটির লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে সদস্য দেশগুলো তাদের অবস্থান জাহির করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) অনেক সংস্থা গড়ে ওঠে। এসব সংস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভারসাম্যসহ একটি বহুমুখী বৈশ্বিক ব্যবস্থার স্বীকৃতির বিষয়টি প্রচার করে আসছে জোটটি।

জোটটিতে যোগ দিতে ইচ্ছুকরা কারা

যেসব দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চীন ও ভারতের প্রভাব বেশি, এমন উন্নয়নশীল দেশগুলো ব্রিকসে যোগ দিতে চায়। এমনকি, ওসব দেশের জন্য জোটটির দুয়ার খোলা। ইতোমধ্যে ২৩টি দেশ ব্রিকসে যোগ দিতে আবেদন করেছে। জোটটিতে যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে আরও কয়েকটি দেশ। যার মধ্যে রয়েছে, আর্জেন্টিনা, ইথিওপিয়া, ইরান ও সৌদি আরব।

ব্রিকসের অন্যতম আকর্ষণ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, যা ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের বিকল্প হিসেবে ধরা হচ্ছে ব্যাংকটিকে।

সাংহাইভিত্তিক ব্যাংকটি ইতোমধ্যে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ ও কয়েকটি স্টেটকে এই ঋণ দেওয়া হয়েছে।

পুতিনকে নিয়ে দ্বিধা

ব্রিকসের আসন্ন সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অংশ নেবেন কি না, এ নিয়ে এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটেনি। এ নিয়ে কূটনৈতিক উত্তেজনাও বাড়ছে। এই সম্মেলনে অংশ নিতে রুশ প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা। তবে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। আর আইসিসির সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকা। নিয়ম অনুযায়ী, আইসিসির সদস্য দেশগুলোয় ভ্রমণের সময় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে গ্রেপ্তার করা যেতে পারে।

কয়েক মাসের দ্বিধাদ্বন্দ্বের পর প্রোটিয়ারা জানিয়েছে, ভার্চুয়ালিভাবে পুতিন এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতায় রয়েছেন এএনসি পার্টি। রাশিয়ার সঙ্গে এই রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক বহু পুরনো। শীতল যুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যে আওয়াজ তোলা হয়েছিল এতে সমর্থন দিয়েছিল এএনসি পার্টি। পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়েও নিন্দা জানায়নি তারা।

ডলারের প্রভাব কমানো

ব্রিকসের মূল হোতা যে পাঁচটি দেশ রয়েছে সেগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য গোটা বিশ্বের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ১৮ শতাংশ। বাণিজ্যের বেশিরভাগ লেনদেন হয় ডলারে। তবে, জোটটির অন্যতম লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের প্রভাব কমানো ও মার্কিন মুদ্রা থেকে নিজেদের মুক্ত করা।

জোটটি বাণিজ্যের জন্য সদস্যদের জাতীয় মুদ্রার বর্ধিত ব্যবহার এবং দীর্ঘমেয়াদে একটি সাধারণ অর্থপ্রদানের ব্যবস্থা প্রবর্তনকে সমর্থন করে।

চলতি বছরের শুরুতে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করে ব্রাজিল ও চীন। নিজেদের মুদ্রায় বাণিজ্য করার জন্যই এই চুক্তি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং

গত মাসে ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর শিক্ষামন্ত্রীরা একটি বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীরা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিং তৈরি করার ইচ্ছা প্রকাশ করে যেগুলো জোটটির দেশ সমূহে রয়েছে।

রাজনৈতিক কারণে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিদ্যমান আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করে মস্কো।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button