আসন্ন ৪৭তম আসিয়ান সম্মেলনকে ঘিরে জমজমাট প্রস্তুতি চলছে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে। আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত কুয়ালালামপুর কনভেনশন সেন্টার (কেএলসিসি)-এ অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম এই আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলনের স্থান ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি। কর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন—স্থাপনা নির্মাণ, বাহ্যিক সজ্জা ও ল্যান্ডস্কেপিংয়ের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
রাস্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, কনভেনশন সেন্টারের চারপাশে আসিয়ান ঐক্যের প্রতীকী নকশা, ভাস্কর্য ও থিমভিত্তিক ইনস্টলেশন এলাকাটিকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে ১০ মিটার উঁচু ও ২০ মিটার ব্যাসের স্বচ্ছ গম্বুজ, যার ভেতরে প্রদর্শিত হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য।
বিকেল বা রাতে বৃষ্টি সত্ত্বেও প্রযুক্তিগত কর্মী ও ঠিকাদাররা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী কেএলসিসি সংলগ্ন সব প্রধান সড়কে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ২০ অক্টোবর, সোমবার সকালে ট্রাফিক পুলিশের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে, যাতে অতিথিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন থাকে। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার ও কেএলসিসি পার্কের আশপাশের এলাকায় এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরা আসিয়ান থিমের ভাস্কর্য ও আলোকসজ্জার সামনে ছবি তুলছেন, যা আঞ্চলিক বন্ধুত্ব ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। ২০২৫ সালের আসিয়ান চেয়ারম্যানশিপের সমাপ্তি হিসেবে মালয়েশিয়া এ সম্মেলন আয়োজন করছে, যার মূল প্রতিপাদ্য—“অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন” (Inclusivity and Sustainability)।
ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আসিয়ান সম্মেলন হতে যাচ্ছে এবারের আয়োজনটি। অংশ নেবেন বিশ্ব রাজনীতির শীর্ষ নেতারা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন— যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সাফল্যের বড় মঞ্চ হয়ে উঠছে এবারের কেএলসিসি—যেখানে আসিয়ান ঐক্য, সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা করছে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।



