টাস্কফোর্সের অভিযান শুরু, জেলেশূন্য পদ্মা-মেঘনা
প্রজনন রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনার প্রায় ৭০ কিলোমিটার নদী অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চাঁদপুর সদর উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় এলাকার লালপুর, কল্যাণপুর, আনন্দ বাজার, রামদাসদী, বহরিয়া ও হরিণা ফেরিঘাট এবং পৌর শহরের রেলওয়ের বড় স্টেশন যমুনা রোড, টিলাবাড়ী, পুরান বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে নেই কোনো জেলে নৌকা। তবে যাত্রী ও মালবাহী অন্যান্য নৌযান চলাচল করছে।
এইদিকে, চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দবাজার এলাকায় জেলেরা নৌকাগুলো ডাঙ্গায় উঠিয়ে রেখেছে। অপরদিকে পৌর শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন টিলাবাড়ি এলাকায় খালের মধ্যে কারেন্ট জালসহ কিছু জেলে নৌকা চোখে পড়ে। আনন্দ বাজার এলাকার জেলে ইসমাইল হোসেন বলেন, গত দুদিন আগেই আমরা নৌকা ও জাল ডাঙ্গায় উঠিয়ে রেখেছি। ভরা মৌসুমে নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া যায়নি। একই এলাকার জেলে মনির হোসেন বলেন, প্রকৃত জেলেরা মা ইলিশ ধরে না। আমরা নিষেধাজ্ঞা মেনে এখন অবসর আছি। তবে কিছু মৌসুমি জেলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইলিশ ধরে থাকেন।
১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের কোটারাবাদ এলাকার জেলে ইসমাইল মোল্লা বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলি। কিন্তু সংসার তো চলে না। তাই সরকারি সহায়তা আরও বাড়ানো দরকার। হানারচর ইউনিয়নের হরিণা ফেরিঘাটের মাছ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম কালু হাওলাদার বলেন, আমাদের আড়তগুলো গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ১০টার পর বন্ধ করে দিয়েছি। আগামী ২২ দিন অবসর সময় কাটাতে হবে। তবে সরকারি অভিযান বাস্তবায়ন করতে হলে মেঘনা নদীতে কোন নৌকা থাকতে পারবে না।
চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক জানান, টাস্কফোর্স নদীতে অভিযান শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেননি। বিশাল এই জলরাশিতে সবার সহযোগিতা থাকলে মা ইলিশের প্রজনন রক্ষা সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ্। নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন আমরা জেলে পাড়ায় গিয়ে মা ইলিশ না ধরার বিষয়ে সচেতন করেছি। তারপরও কেউ আইন অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



