আন্তর্জাতিক মঞ্চে আবারও বাংলাদেশের জয়ধ্বনি—ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় ইউসুফের কৃতিত্ব
মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন ও ক্বেরাত প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তরুণ ক্বারী মোহাম্মাদ আবু ইউসুফ ক্বেরাত বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ‘ইন্দোনেশিয়ান কোরআন রিসাইটারস অ্যাসোসিয়েশন’ (IPQI Mesir)’ -এর সভাপতি নাসরুল্লাহ আব্দুর রহমান।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) কায়রোতে আয়োজিত প্রতিযোগিতার সমাপনী অধিবেশনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১২টি দেশের ১৪৩ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ক্বারী আবু ইউসুফ ছেলেদের ক্বেরাত বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। একই গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেন বশির উসমান ইমাম (নাইজেরিয়া) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন মুহাম্মাদ তাওফীক হাকীম (ইন্দোনেশিয়া)।
গাজিপুর জেলার আবদুল জলিল এর পুত্র ক্বারী আবু ইউসুফ বাংলাদেশের বিশিষ্ট ক্বিরাত শিক্ষক শায়েখ হাফেজ ক্বারী নাজমুল হাসান (হাফিযাহুল্লাহ) সাহেবের ছাত্র। তিনি তাহফিজুল কুরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদ্রাসা থেকে হিফজ ও তাজবীদের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলমুল ক্বিরাত বিভাগে অধ্যয়নরত।
এর আগে, ক্বারী ইউসুফ ২০২৩ সালে মিশরের ওয়াজারাতুল আওক্বাফ আয়োজিত
“حفظ القرآن الكريم كاملا مع الصو(হিফজুল কোরআন মাআস সাওতিল হাসান) প্রতিযোগিতায় ৩০ পারা গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। এছাড়া তিনি মিশরের পোর্ট সাইদ আন্তর্জাতিক ক্বেরাত প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন এবং ২০১৭ সালে বৈশাখী টেলিভিশনের জাতীয় ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেন। তাছাড়াও তিনি বিভিন্ন জাতীয় টেলিভিশনেও একাধিকবার পুরস্কৃত হয়েছেন।
তার এই আন্তর্জাতিক সাফল্যে বাংলাদেশের ক্বারী সমাজ ও ইসলামি শিক্ষাবিদদের মধ্যে আনন্দ ও গর্বের সঞ্চার হয়েছে।
তার শিক্ষক শায়েখ নাজমুল হাসান বলেন,
“ইউসুফের এই অর্জন শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়; এটি বাংলাদেশের হিফজ ও ক্বিরাত শিক্ষার মানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরেছে।”
নিজ অনুভূতি প্রকাশ করে ইউসুফ বলেন,
“আমি এই সাফল্য উৎসর্গ করছি আমার শিক্ষক, মাদরাসা ও দেশের প্রতিটি কুরআনপ্রেমী মানুষের প্রতি। আমার ইচ্ছা—বাংলাদেশ থেকে আরও অনেক তরুণ যেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কুরআনের পতাকা উঁচিয়ে ধরতে পারে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে ক্বারী ইউসুফ বলেন, কুরআনের খেদমতের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ইসলামের সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেওয়া এবং বাংলাদেশকে ক্বিরাত জগতে আরও উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করা।
দেশ-বিদেশের অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁর জন্য দোয়া করছেন, যেন আল্লাহ তায়ালা তাঁর কণ্ঠ, জ্ঞান ও আমলকে বরকতময় করেন, এবং তাঁকে কুরআনের বিশ্বদূত হিসেবে কবুল করেন।



