ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন (কপ ৩০)-এর হলগুলোতে রেকর্ড সংখ্যক ১,৬০২ জন জীবাশ্ম জ্বালানির লবিস্ট ঘোরাফেরা করছেন বলে ‘কিক বিগ পলিউটার্স আউট’ (কেবিপিও) গোষ্ঠীর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর অর্থ হলো এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতি ২৫ জনের মধ্যে একজন হলেন লবিস্ট। জলবায়ু পদক্ষেপের নীতি নির্ধারণে ‘বৃহৎ দূষণকারীদের’ ক্ষমতা বন্ধের দাবি নিয়ে গঠিত ৪৫০ টিরও বেশি সংস্থার জোট হলো কেবিপিও, যারা প্রতি বছর রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত লবিস্টদের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে থাকে। তাদের বিশ্লেষণ অনুসারে, ১,৬০২ জন লবিস্টের এই সংখ্যাটি সম্মেলনে প্রায় যেকোনো দেশের প্রতিনিধি দলের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি; শুধুমাত্র স্বাগতিক ব্রাজিলই (৩,৮০৫ জন) এর চেয়ে বেশি প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।
আনুপাতিকভাবে, কপ ৩০-তে জীবাশ্ম জ্বালানির লবিস্টদের এই উপস্থিতি গত বছর আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু আলোচনার তুলনায় ১২% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কেবিপিও তাদের পর্যবেক্ষণ শুরু করার পর থেকে এটিই লবিস্টদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ। সবচেয়ে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দশটি দেশের সমস্ত প্রতিনিধির (মোট ১,০৬১ জন) সম্মিলিত প্রবেশের চেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি প্রবেশপত্র এই জীবাশ্ম জ্বালানির লবিস্টদের দেওয়া হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল এমিশনস ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন এক্সনমোবিল, বিপি এবং টোটালএনার্জিসের মতো তেল ও গ্যাস সংস্থাগুলির প্রতিনিধি সহ মোট ৬০ জনকে কপ ৩০-তে নিয়ে এসেছে। কেবিপিও আরও জানিয়েছে, গ্লোবাল নর্থের কিছু দেশও তাদের সরকারি প্রতিনিধিদলে জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছে; যেমন ফ্রান্স তার দলে সিইও প্যাট্রিক পৌইয়ানে সহ টোটালএনার্জিস থেকে পাঁচজন সহ মোট ২২ জন জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতিনিধিকে রেখেছে।
কেবিপিও -এর সদস্য জ্যাক্স বনবন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এটা সাধারণ জ্ঞান যে যারা একটি সমস্যার কারণ, তাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিলে সেই সমস্যার সমাধান করা যায় না।” তিনি কঠোর ভাষায় যোগ করেন, “তবুও তিন দশক এবং ৩০টি কপ সভার পরেও, ১,৫০০-এরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানির লবিস্টরা জলবায়ু আলোচনায় এমনভাবে ঘোরাফেরা করছেন যেন এটি তাদেরই স্থান… কপ ৩০ একটি ‘বাস্তবায়ন কপ ‘ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু এটি সেই সঙ্কট মোকাবেলার জন্য আয়োজিত সম্মেলনে বৃহৎ দূষণকারীদের বাইরে রাখার মতো একটি মৌলিক দাবিও বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে।”



