প্রবাসহাইলাইটস

মালয়েশিয়ার মেডিসেরাম কোম্পানীর সাথে বাংলাদেশী কর্মীদের বিরোধ মীমাংসায় তৎপর হাইকমিশন

malaysia news
মালয়েশিয়ার নিলাইয়ের মেডিসেরাম এসডিএন বিএইচডি কারখানায় কর্মরত ১৭২ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের চাকরিচ্যুতির নোটিশ ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরপরই কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন উদ্যোগ নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে একাধিক দফা আলোচনায় বসে।

হাইকমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দেওয়া তথ্যে জানানো হয়, ২০২৩ সাল থেকেই কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নানা বিষয়ে বিরোধ চলছিল। কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হলেও পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। অভিযোগ রয়েছে—বাংলাদেশি শ্রমিকরা ২০২৫ সালে ছয় দফা ধর্মঘটে যান: ১৬–২৩ জানুয়ারি, ৯–২৭ মার্চ, ১৫–২৬ মে, ২৪–২৬ জুন, ১–২ অক্টোবর এবং সর্বশেষ ২৩ অক্টোবর থেকে চলমান ধর্মঘট। সর্বশেষ ধর্মঘটের জেরে ১৭২ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। কয়েকজন কাজে যোগ দিলেও বেশিরভাগই এখনও কোম্পানির হোস্টেলে অবস্থান করে ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি বাংলাদেশেও চলে মানব বন্ধন, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।

হাইকমিশন জানায়, অভিযোগগুলো যাচাই এবং চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল চেয়ে কোম্পানিকে লিখিতভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে শ্রমিকদের অভিযোগ সরেজমিনে যাচাই করতে ১৩ নভেম্বর একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করে। সেখানে জানা যায়—অক্টোবর পর্যন্ত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রেস্পন্সিবল বিজনেস অ্যালায়েন্স (আরবিএ)-এর সুপারিশ অনুযায়ী কোম্পানি ১৮৪ জন শ্রমিককে অভিবাসন ব্যয় হিসেবে ২২,৫০০ রিংগিত করে প্রদান করেছে।

ভিসা নবায়ন সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে—৮৬ জন কর্মীর ভিসা অনুমোদিত হয়েছে, আর ৯৮ জনের প্রক্রিয়া চলমান। অপেক্ষমাণদের জন্য কোম্পানি বিশেষ পাসও ইস্যু করেছে।

শ্রমিক প্রতিনিধিরা আলোচনায় জানান—তারা আর মেডিসেরামে কাজ করতে চান না এবং অন্য কোম্পানিতে যেতে হাইকমিশনের সহায়তা প্রত্যাশা করেন। তবে বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ পরিবর্তন মালয়েশিয়ার নিজস্ব আইনের আওতাভুক্ত হওয়ায় বিষয়টি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবু শ্রমিকদের দাবি মালয়েশিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব লেবারকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে হাইকমিশন।

অন্যদিকে, হাইকমিশনের আহ্বানে মেডিসেরাম কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে—যদি ধর্মঘটকারী শ্রমিকরা কাজে ফিরতে সম্মত হন এবং ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র পাওয়া যায়, তবে পুনর্বহালের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তবে হাইকমিশন সতর্ক করেছে—ধর্মঘট দীর্ঘায়িত হলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি বাড়বে। হাইকমিশন বলেছে, মেডিসেরামে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছাতে কোম্পানি ও সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker