বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের শুদ্ধতা নিশ্চিতে সরকার হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করবে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিদ্যুৎ আইনের গেজেটে এই কথা বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ ধরনের ল্যাব আরও আগেই প্রতিষ্ঠা হওয়া প্রয়োজন ছিল। এখন হাইভোল্টেজের যন্ত্রাংশ পরীক্ষার কোনও সরকারি ব্যবস্থা নেই। সাধারণত বেসরকারি কোম্পানিগুলো নিজ উদ্যোগে এই ধরনের যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করে থাকে। অন্যদিকে স্বল্প পরিসরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট কিছু পরীক্ষা করে থাকে। তবে এটি পর্যাপ্ত নয়। বিদেশি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে যন্ত্রাংশ পাঠায়, সেভাবেই স্থাপন করা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে এখন হাইভোল্টেজের যেসব যন্ত্রাংশ স্থাপন করা হয় তার বেশিরভাগই কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শুধু নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশ্বাস করে স্থাপন করা হয়। তবে আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রসারিত হচ্ছে। এখন আমরা অনেক যন্ত্রাংশ ব্যবহার করছি, যেগুলো হাইভোল্টেজের। অনেকক্ষেত্রেই নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যে ভোল্টেজ লেভেল লিখে দেয়, তা ঠিক থাকে না। এর হেরফের হতে পারে। এতে করে সাধারণ ক্রেতা ঠকতে পারে। এজন্যই একটি বিশ্বমানের ল্যাবরেটরি থাকাটা জরুরি।
বিদ্যুৎ আইনে বলা হয়েছে, হাইভোল্টেজের এসব যন্ত্রাংশ পরীক্ষার জন্য সরকার ল্যাবরেটরি স্থাপন করবে। সেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করতে পারবে। যন্ত্রাংশ পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।
বিদ্যুৎ আইনের ৬২ ধারায় হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদিত ট্রান্সফরমার এবং সব পরিমাণ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরীক্ষা করে অবশ্যই সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।
অনেক দিন থেকেই বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশে স্টার লেবেলিং করার কথা চিন্তা করছে সরকার। এতে বলা হচ্ছে, ছোট আকারের যন্ত্রাংশেও স্টার লেবেলিং থাকতে হবে। কোনও একটি যন্ত্র কী পরিমাণ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী তার ওপর নির্ভর করে লেবেলিং করা হবে। সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এই স্টার লেবেলিং প্রথা ব্যাপক হারে চালু করতে যাচ্ছে। তবে এজন্য সবার আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। তবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের সঙ্গে এবার হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের বিষয়টি যোগ করায় বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের আরও শুদ্ধতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন বলেন, ‘হাই ভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাবরেটরি হিসেবে একটি স্বাধীন সংস্থা করা হবে। স্বাধীন সংস্থা না হলে টেস্ট যে করা হবে, তা নিরপেক্ষ হবে না। এই প্রতিষ্ঠান যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করে একটি সার্টিফিকেট দেবে।’ তিনি জানান, পাওয়ার সেলের অধীনে বিদ্যুৎ বিভাগের অর্থায়নে এই ল্যাব প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এজন্য বিশেষজ্ঞও নেওয়া হবে।