সাজিদ রহমানের প্রথম উপন্যাস ‘আলমপনার দরবারে’ প্রকাশ হলো
সাজিদ রহমান। পুরোদস্তুর একজন প্রকৌশলী। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগে রংপুর জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে আছেন। চাকুরির ফাঁকে তিনি জীবনের বাস্তবতা নিয়ে গল্প, কবিতা লিখছেন। এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হলো তার প্রথম উপন্যাস ‘আলমপনার দরবারে’। অ্যাডর্ন পাবলিকেশন উপ্যাসটি প্রকাশ করেছে। এটির প্রচ্ছদ করেছেন: মোস্তাফিজ কারিগর। আর এর মলাট মূল্য: ৩২০ টাকা। এর আগে স্বপ্ন’৭১ প্রকাশন থেকে ‘বিজিতের পলায়নবিদ্যা’ [ছোটগল্প, ২০২২ (৩য় মুদ্রণ)]; ও ‘বাউরা’ [ছোটগল্প, ২০২৪ (২য় মুদ্রণ) প্রকাশিত হয়েছে।
মানুষের জীবন মানেই অসংখ্য গল্পের সমষ্টি। সেই গল্পে হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, ঘৃণা কিংবা প্রেম ঠাসাঠাসি করে অবস্থান করে। ওসবের মাঝেই থাকে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম হিউমার, যা উপলব্ধি করতে পারলে হাজারও দুঃখের মাঝেও অনাবিল শান্তির পরশ বইতে পারে। সমাজের চলমান ঘটনা, হোক সেটা সামাজিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক, সেটার একটা আলাদা ব্যাখ্যা থাকতে পারে। সেই গল্প প্রকাশ পেতে পারে হাস্যরস ও বিদ্রূপের সাথে। গল্পকার সাজিদ রহমান প্রথমবারের মত হাজির হয়েছেন হিউমার সমৃদ্ধ উপন্যাস “আলমপনার দরবারে” নিয়ে।
উপন্যাসটি নিয়ে লেখক সাজিদ রহমান বলেন, ‘এই উপন্যাসে বর্তমান সমাজের অনেক অসঙ্গতির কথা খুব সূক্ষ্ম এবং হাস্য-রসাত্বকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। গল্পের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে হিউমারের নানা উপাদানের সাথে সাক্ষাৎ হবে, যা পাঠককে ভিন্ন স্বাদের সন্ধান দিবে। এজন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। বইটি পাঠক প্রিয়তা পেলে সেই পরিশ্রম সার্থক হবে।‘
জানতে চাইলে লেখক গল্পের শুরুর গল্পটার কিছু ইঙ্গিত দেন। বন্ধু রফিকের অনুরোধে তাঁর ঠিকাদারি ব্যবসা দেখাশুনা করতে বের হয়েছিলো হানজালা। হানজালা যে এই গল্পের প্রধান চরিত্র, হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করে বাহারুল ওরফে হাড্ডির দরবারে। একের পর এক ঘটনায় নাস্তানাবুদ হয়ে হানজালা বুঝতে পারে, ওসবই ছিল নিছক স্বপ্ন। স্বপ্নের ঘোর কাটতেই বাস্তব জীবনে এসে হাজির হয় স্বপ্নের সেই বাহারুল। থানায় আটক ফাঁকে খালাকে ফেরাতে গিয়ে সে মুখোমুখি হয় বিচিত্র সব মানুষের। বন্ধু রফিকের একের পর অদ্ভুত কাণ্ডে হয়রান হতে হয় তাঁকে। হানজালার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আগেই উধাও হয়ে যায় নেহা। নেহাকে খুঁজতে গিয়ে হানজালার সাথে পরিচয় হয়ে যায় জয়ার। মেঘডুবিতে একটা খুনের পর দূরের এক আশ্রমে জয়ার উপস্থিতি ও নেহার স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়ায় হানজালাকে। এদের সাথে রুপা ভাবি, বলি খালু, ছোটবেলার প্রেম শিউলি, থানার ডিউটি অফিসার রঞ্জন বাবু, ওসি জাফর আলী, ভাস্কর কিংবা গামার গল্পের উছিলায় উঠে আসে নানা বাঁকের গল্প, বিভিন্ন অসঙ্গতির চিত্র। লেখক আরও জানান, পূরা স্বাদ পেতে পড়তে হবে উপন্যাস।
লেখক ১৯৮১ সালের ৭ মার্চে, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ড থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। ছোটবেলা থেকে লেখালেখির সাথে তিনি যুক্ত। দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, লিটিল ম্যাগ ও সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখিতে সক্রিয়।



