হিরো অফ দি ডে

নিউমার্কেটে সরবরাহের কাজ ছেড়ে নিজেই উদ্যোক্তা

niকাঠের আসবাব তৈরি হবে, এ জন্য যন্ত্রপাতি তো লাগবে। সেই যন্ত্র হোক ছোট বা বড়। এসব যন্ত্রপাতি কি সব বিদেশ থেকে আসছে? দেশের সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ে তো গড়ে উঠেছে কাঠের আসবাব তৈরির কারখানা। সুখবর হলো, এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে এসব যন্ত্রপাতি। যদিও একসময় বিদেশ থেকে আসত। এখন সারা দেশের মাঝারি ও বড় আসবাব তৈরির কারখানার কারিগরদের কাছে যন্ত্র সরবরাহের পরিচিত নাম এভারেস্ট উড ওয়ার্কিং মেশিন। বছরে ১৫ কোটি টাকার বেশি যন্ত্র বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি। এসব যন্ত্রের দাম ৩৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত।

মো. ইউসুফ ও রাশেদা আক্তার দম্পতি প্রায় ১৫ বছর ধরে গড়ে তুলেছেন আসবাব তৈরির দেশীয় এই যন্ত্রের কারখানা। এখন একটি নয়, চারটি কারখানায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন, তৈরি করছেন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ। সেই যন্ত্র ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে, তৈরি হচ্ছে নানা কারুকার্যের দরজা ও আসবাব। রাজধানীর শাহজাদপুর ও বাড্ডাতেই এসব কারখানা অবস্থিত।

কারখানায় গিয়ে দেখা গেল, শ্রমিকেরা নতুন যন্ত্র তৈরি করছেন, সবই ইস্পাতের তৈরি। কেউ ইস্পাত কাটছেন, তো কেউ নতুন করে জোড়া দেওয়ায় ব্যস্ত। কারখানাতেই তৈরি হচ্ছে সব কাঠামো। আর দেশি ও বিদেশি মোটর দিয়ে তৈরি হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ যন্ত্র। এসব যন্ত্রের মাধ্যমে বিকশিত হচ্ছে দেশীয় ফার্নিচার শিল্প।

এভারেস্টের কারখানায় তৈরি হয় বিভিন্ন আকৃতির জয়েন্টার প্লেনার, থিকচেন প্লেনার, সিজেল মোটাইজার, সার্কুলার ‘স’, মোল্ডার মেশিন, টু-ইন-ওয়ান জয়েন্টার ও থিকনেচার, থ্রি ইন ওয়ান জয়েন্টার-থিকনেচার-সার্কুলার এবং ফোর ইন ওয়ান জয়েন্টার-থিকনেচার-সার্কুলার-সোজা মোল্ডিং।

কারখানার শ্রমিক সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কাজের আদেশ আসে। এ জন্য সব সময় আমাদের কাজ চলতে থাকে। এসব যন্ত্র ছাড়া এখন আসবাব তৈরি করা যায় না। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির কাছে আমরা ভালো গ্রাহকদের তালিকা চেয়েছিলাম। তারাই খোঁজ দিয়েছিল এভারেস্ট উড ওয়ার্কিংয়ের। ব্যাংক থেকে তারা ঋণ নিয়েছে, নিয়মিত শোধও করছে। এভারেস্ট উডের মালিক মো. ইউসুফ বলেন, ‘আগে নিজ হাতে যন্ত্রপাতি বানাতাম। এখন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। এমন কোনো জেলা বা থানা নেই, যেখানে আমার যন্ত্রপাতি ব্যবহার হয় না।’

২০০৫ সালের আগে নিউমার্কেটে মালামাল সরবরাহের কাজ করতেন তিনি। ওই বছরই প্রস্তুতি ছাড়া আসবাব তৈরির যন্ত্রপাতি বানানোর কাজ হাতে নেন। কাগজে যন্ত্রের ছবি এঁকে সেই আদলে ছোট ছোট যন্ত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে ছোট কারখানা থেকে বড় কারখানা হয়েছে। আগে যন্ত্রপাতি যেত নির্দিষ্ট এলাকায়, এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কাঠের আসবাব কারিগরদের কাছে পরিচিত নাম এভারেস্ট।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button