প্রবাস
মিসরের নিজস্ব জমিতে দূতাবাস স্থাপন করবে বাংলাদেশ
প্লট বুঝে নিল উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধি দল
বিশ্বের প্রথম বেসামরিক দেশ মিসরের নতুন প্রশাসনিক রাজধানীর (নিউ কায়রো) একটা বড় অংশ জুড়ে তৈরি হচ্ছে বিশাল ‘কূটনৈতিক এলাকা’। যেখানে কায়রোস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস গুলো স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিসর সরকার। আর সেই কূটনৈতিক এলাকায় সর্ব প্রথম জমি কিনল বাংলাদেশ সরকার। যেখানে স্থাপন করা হবে বাংলাদেশ দূতাবাস ও রাষ্ট্রদূতের আবাসন ভবন (বাংলাদেশ হাউজ)। গত জানুয়ারি (২০২১) মাসে ১০ মিলিয়ন ডলারে কেনা জমিটির চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন নিউ কায়রো এডমিনিস্ট্রেশন ক্যাপিটাল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল আহমেদ -জাকী – আবদিন ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মুনিরুল ইসলাম ।
জানা যায়, মিসরের নতুন রাজধানী নিউ কায়রোতে নিজেদের মিশন এবং আবাসন গড়তে ইতিমধ্যে ৬০টি ও অধিক দেশ অনুরোধ করেছেন। নতুন প্রশাসনিক রাজধানীতে বেশিরভাগ কূটনৈতিক মিশন এবং বিদেশী দূতাবাস গুলি তাদের ঘাঁটি গাড়তে চায়। এডমিনিস্ট্রেশন ক্যাপিটাল কম্পানিটি তাদের প্রথম পর্বের কাজ প্রায় শেষ করে নিয়েছে, নতুন কূটনৈতিক এলাকাটিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মিশন ছাড়াও থাকবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নতুন সদর দফতর, সংসদ ভবন ও সিনেট ভবন।
মিশর সফরত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলকে কায়রোস্থ পররাষ্ট্র দফতরে অভ্যর্থনা জানান দেশটির অর্থ ও প্রশাসন বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত ইয়াসের রেজা। বাংলাদেশে প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অফিস, পররাষ্ট্র, অর্থ, পরিকল্পনা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও ও মিসরস্থ বাংলাদেশ দুতাবাসের রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মিশর ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে দু’দেশের নেতৃত্ব, সরকার এবং জনগণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা নতুন প্রশাসনিক রাজধানীতে তাদের মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের সময় মিসরের বর্তমান সরকারের যে দুর্দান্ত কৃতিত্ব দেখেছেন তার ভূঁয়সী প্রশংসা করেন। মিশরে তাদের দূতাবাসকে এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আফ্রিকা মহাদেশের সাথে সহযোগিতার একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে ব্যাক্ত করেন।
মিসরের পক্ষে, সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূত ইয়াসের রেজা অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত বন্ধুত্বের কথা জোর দিয়ে উল্লেখ করেন বলেন, বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা প্রথম বিদেশী মিশন হিসেবে তাদের দূতাবাস এবং রাষ্ট্রদূতের বাসভবন প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করেছে। বাংলাদেশের এই উদ্যোগটি দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতাকে প্রতিফলিত করছে এবং চলমান সম্পর্ককে আরও মজবুত ও বৃদ্ধি করেছে।
জনাব ইয়াসের রেজা আরও বলেন, মিশর-বাংলাদেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছাকেও প্রকাশ করছে যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় ধরনের উৎসাহ প্রদান করবে। তিনি আরো বলেন, মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সকল পর্যায়ে বাংলাদেশ দূতাবাসকে সব ধরনের সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। যা বাংলাদেশের নিজস্ব জমির উপর দুতাবাস ও রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণ শুরুর কাজকে ত্বরান্বিত করবে।