দেশহাইলাইটস

‘করোনা আরেকটু নিয়ন্ত্রণে আসলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেব’

hasinaকরোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আরেকটু নিয়ন্ত্রণে আসলেই স্কুল-কলেজ সব খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারবে। মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে একাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া এটা একটা ভালো কাজ হয়েছে। করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। আরেকটু নিয়ন্ত্রণে আসলেই স্কুল-কলেজ সব খুলে দেব। তখন তারা পড়াশোনা করতে পারবে। যাদের পাস করানো হয়েছে শতভাগই পাস, তার যখন শিক্ষা নেবে তখনই যাচাই করা যাবে কে টিকে থাকবে, কে টিকে থাকবে। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না, কলেজে যেতে পারছে না, ইউনিভার্সিটিতে যেতে পারছে না তাদের মনে যে একটা দুঃখ ছিল অন্তত এই রেজাল্ট পাওয়ায় সেটা দূর হবে। আর এখন তারা পড়াশোনায় মনযোগী হবে। আগামীতে তারা পড়াশোনা ভালো করবে সেটাই আশাকরি।

তিনি বলেন, দেশের মানুষকে দক্ষজনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কওমি মাদরাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছি, যাতে মাদরাসা থেকে লেখাপড়া করেই সাধারণদের মতো সুযোগ সুবিধা পায়।

বিমান খাতে সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, বিমানের জন্য নতুন প্লেন কিনলাম এতোগুলি। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সেগুলো আর যথাযথভাবে চালাতে পারলাম না এটাই দুঃখ। তারপরেও সীমিত আকারে চলছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বিমান খসে পড়ে এরকম অবস্থা। প্লেনে উঠলে পানি পড়ত, এমন একটা অবস্থা ছিল, বিনোদনের কোন ব্যবস্থা ছিল না। আমরা সরকারের আসার পর বিমান ক্রয় শুধু না নতুন নতুন লাইন সবকিছু করেছি। আগে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একটাই ছিল শাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সেটাকে উন্নত করেছি। চট্টগ্রাম সিলেটে উন্নতি করেছি। বরিশাল, সিলেট, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে উন্নত করেছি। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করে দিচ্ছি, যেটা হবে প্রাচ্য পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন।

করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভ্যাকসিনের যখন গবেষণা শুরু হয়েছে তখনও আবিষ্কারও হয়নি বা কোনটা আসবে আমরা জানি না। আমার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নির্দেশ ছিল কারা কারা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করছে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং সব জায়গায় আমরা ভ্যাকসিন কিনব সেটার ব্যবস্থা নিয়ে রাখা। যেটা আমরা আগে পেয়েছি সেটা এনেছি। আমরা ভ্যাকসিনের জন্য অগ্রিম ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছি। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃতি দিয়েছে সাথে সাথে আমরা কিনেছি এবং ভ্যাকসিন এসে গেছে।

তিনি বলেন, অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা সেরাম ইনস্টিটিউটের যে কোভিডশিল্ড ভ্যাকসিন তারা আবিষ্কার করেছে সেটাই ৩ কোটি ডোজ ক্রয় করেছি। ভারত আমাদের ২০ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে। প্রথম চালান ৫০ লাখ চলে এসেছে। প্রাথমিকভাবে এটা দেওয়াও শুরু হয়েছে। দেওয়ার পর সেটার খুব খারাপ কোন রিঅ্যাকশন শোনা যায়নি। কারো হাতে একটু বেশি ব্যথা হয়েছে বা কারো হাল্কা জ্বর তাও ৪/৫ জনের সেটাও বেশি না। আমরা সেটাও মনিটর করছি। আর ইতিমধ্যে প্রত্যেকটা জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে। সব পৌঁছে যাওয়ার সাথে সাথে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রেজিস্ট্রেশন করার যারা চায়। কারণ এব্যাপারে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এন্টিবডি টেস্টের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেভাবে আমরা করোনা মোকাবিলার বিভিন্ন ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এজন্য অনেক সাধুবাদ বাংলাদেশ নিয়েছে, খালি সাধুবাদ শুনি না নিজের দেশের ভেতরে, কিন্তু বিশ্বের সবাই বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাই হোক শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, যে যাই বলুক। দেশে-বিদেশে নানাভাবে নানা অপপ্রচার চালানোর প্রচেষ্টা, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি সততা নিয়ে কাজ করলে আর সেই কাজের সুফল যদি জনগণ পায় সেখানেই একটা তৃপ্তি যে না জনগণের জন্য কিছু করতে পারলাম। আর কেউ যদি আন্তরিকতার সাথে কাজ করে অবশ্যই একটা দেশকে উন্নত করা যায়। সেটা আজ প্রমাণিত।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘুনে ধরা সমাজ ভেঙে একটা নতুন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের মানুষ যখনই এর সুফল পেতে শুরু করেছে ‘৭৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যা করা হল।

গৃহহীনদের ঘর দেওয়া কথা জাতির পিতাই বলেছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে ব্যারাক হাউজ করে সেখানে মানুষকে ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। তাতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের ঘর করে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে আশ্রয়ণ ভূমি প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করেছি। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে কিছুদিন আগে ব্যারাক হাউজে সাড়ে ৩ হাজার দুই কামরা বিশিষ্ট ছোট ছোট ঘর এবং দুই কাঠা জমি করে প্রায় ৬৬ হাজার মানুষকে পুনর্বাসন করেছি। আরও ১ লাখ মানুষের ঘর তৈরির কাজ চলমান আছে। যেখানে খাস জমি পাচ্ছি। সেখানে দিচ্ছি। আর যদি সেখানে না হয় জমি কিনে তাদের দেব। একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। মুজিবের বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না

এমন আরো সংবাদ

Back to top button