আল-জাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’কে মিথ্যা, সম্মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘আল জাজিরা নিউজ চ্যানেলের “অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন” শিরোনামের একটি মিথ্যা ও মানহানিকর প্রতিবেদন সম্পর্কে বাংলাদেশ জানতে পেরেছে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামী চরমপন্থি গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কিত কুখ্যাত ব্যক্তিরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে, এটি তারই একটি অংশ ছাড়া আর কিছুই নয়। ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে জন্ম নেওয়ার পর থেকেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ যে আদর্শের ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে যাচ্ছে, এই প্রতিবেদনে তার সম্পূর্ণ বিপরীত বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আল-জাাজিরার প্রতিবেদনের ঐতিহাসিক বিবরণে ১৯৭১ সালের জামায়েতের সহযোগিতায় হওয়া ভয়াবহ গণহত্যার কথাও উল্লেখ করতে পারেনি। লাখো বাঙালিকে তারা হত্যা করেছিল এবং দুই লাখেরও বেশি বাঙালি নারীকে ধর্ষণ করেছিল। আল-জাজিরার প্রতিবেদনটি রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের একটি প্রতিচ্ছবি মাত্র। এমনটি এই প্রতিবেদনের প্রধান ভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ দোষী সাব্যস্ত করেছিল, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সরকারিভাবে ঘোষিত মৃত্যুর সংখ্যা চ্যালেঞ্জ করার জন্য।
লক্ষ্যণীয় যে, আল জাজিরার প্রতিবেদনে যিনি মূল ‘তথ্য’ দিয়েছেন, তিনি আল-জাজিরা ঘোষিত একজন ‘সাইকোপ্যাথ’ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধী।
‘প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের অন্যান্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে এই নির্দিষ্ট ব্যক্তির সম্পর্কের কোনো প্রমাণ নেই এবং একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেল হয়েও মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ ব্যক্তির কথার ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটা অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয় যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু দণ্ডিত পলাতক অপরাধী এবং ব্যক্তি বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার চালাতে আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থি ব্যক্তি এবং গণমাধ্যমের, বিশেষত আল-জাজিরার, সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, লন্ডন বা অন্য কোথাও বসে কাজ করা চরমপন্থি ও তাদের মিত্রদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে তৈরি এই অপ্রচারটি প্রত্যাখ্যান করছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশ সরকার অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলছে। অথচ, আল-জাজিরা এমন একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে নিজেকে ‘হিংসাত্মক রাজনৈতিক নকশার হাতিয়ার’ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে, যা বাংলাদেশকে দুঃখিত করেছে।