আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কভিশিল্ড’ ভ্যাকসিনের প্রথম চালান দেশে পৌঁছালে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে চায় সরকার। এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালার জন্য দ্বিতীয় দফায় গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে ৭১৯ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১৫টি কোডের মাধ্যমে ১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সাতটি কোডের বিপরীতে এ অর্থ ছাড় করা হয়েছে। তবে এবারো আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ কোডসহ আটটি কোড নাকচ করে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা এ প্রসঙ্গে বলেন, ভ্যাকসিন কেনাসহ অন্য যেসব লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার, তার ব্যয় নির্বাহের জন্যই এ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আপ্যায়ন ব্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের চাহিদা ছিল, কিন্তু অর্থ বিভাগ থেকে তা পাওয়া যায়নি।
বরাদ্দপত্রে অর্থ বিভাগ বলেছে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কভিড-১৯ প্রতিরোধক ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য পরিবহন খরচসহ কোল্ড চেইনে পৌঁছানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে ৭১৯ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলো। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে অর্থ বিভাগের বাজেটে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় যে তহবিল রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে এ বরাদ্দ দেয়া হয়। এ অর্থ কোন কোন খাতে ব্যয় হবে, তা-ও এতে বলে দেয়া হয়েছে। ওষুধ ও প্রতিষেধক ক্রয় বাবদ ৬২৮ কোটি ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, পণ্যের ভাড়া ও পরিবহন ব্যয় বাবদ ৭২ কোটি ৭২ লাখ ২৮ হাজার টাকা, প্রশিক্ষণ বাবদ ২ কোটি ৩৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা, ভ্রমণ ব্যয় বাবদ ৬ কোটি ৭৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা, চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ ১ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য বিধান সামগ্রী বাবদ ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা এবং প্রকৌশলী ও অন্যান্য সরঞ্জাম বাবদ ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আপ্যায়ন ব্যয় বাবদ ৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার চাহিদা দিলেও এজন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এছাড়া হায়ারিং চার্জ, প্রচার ও বিজ্ঞাপন ব্যয়, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, মুদ্রণ ও বাঁধাই, জরিপ, সম্মানী বা পারিতোষিক, চিকিৎসা ব্যয় ও ডাটাবেজ ব্যয় বাবদও কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
বরাদ্দপত্রে বেশকিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। শর্তগুলো হচ্ছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে, অগ্রিম অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে সমপরিমাণ অর্থের ব্যাংক গ্যারান্টি নিতে হবে, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ এবং দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুসরণসহ প্রযোজ্য আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে। এছাড়া এ অর্থ চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সংশ্লিষ্ট কোডে সমন্বয় করতে হবে। ভ্যাকসিন ক্রয় ও কোল্ড চেইন ইকুইপমেন্ট, এডি সিরিঞ্জ, সেফটি বক্স ক্রয় ইত্যাদি বাবদ ব্যয় প্রতিবেদন অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।