গানের প্রতি ভালোবাসা থাকা জরুরী: জন্মদিনে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
উপমহাদেশের বরেণ্য রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সংগীতে ভারত-বাংলাদেশে সমানভাবে সমাদৃত তিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহু সম্মাননায় ভূষিত এই গুণী শিল্পীর জন্মদিন বুধবার (১৩ জানুয়ারি)। এবারের জন্মদিনে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা তরুণ প্রজন্মকে গানের প্রতি ভালোবাসা আর নিষ্ঠার সাথে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, গানতো আনন্দের বিষয়, আত্মার খোরাক। যারা গান করেন তারা নিশ্চয় গানের প্রতি ভালোবাসা থেকেই গান করেন। গানের প্রতি ভালোবাসা মানে গানকে শুধু ব্যবহার করা নয়, গানের প্রতি ভালোবাসা মানে গানের প্রতি নিষ্ঠা, গানের প্রতি সৎ থাকা, গানের জন্য সাধনার সাথে থাকা। এই জিনিষগুলো ভালোবাসাটাকে আরো গভীর করবে। তরুণ প্রজন্মের প্রতি এই আমার আহ্বান।
জন্মদিনে একই স্মৃতিচারণ করলেন ছোটবেলার সময়কার কথাও। বন্যা বলেন, আমাদের ছোটবেলা এখনকার মতো ছিলো না নিশ্চয়। একেবারে সহজ সরল আমাদের ছোটবেলা। আমার বাবা ইনকাম টেক্সে চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন জেলায় জেলায় বদলি হতেন, সেই সূত্রে দেশের বিভিন্ন জেলায় আমরা থেকেছি। তখনকার দিনে সরকারি চাকরি মানে খুব সাধারণ বিষয় ছিলো। এখনকার সাথে যদি সেই সময়কে মিলাতে যাই, তাহলে দেখি আমাদের সময়ে আনন্দগুলোও খুব সহজ ছিলো। সাধারণ ছিলো। ছোট ছোট বিষয়ে আমাদের আনন্দ ছিলো। আমাদের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষাও ছোট ছোট ছিলো। সেই ছোটবেলায় এখনকার মতো আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন আমরা দেখতাম না, কিন্তু আমরা খুব আনন্দে ছিলাম। এখন আমার মনে হয়, এখনকার বাচ্চাদের আনন্দের উপকরণ অনেক বেশি। আর এ কারণে আমার মনে হয়, আনন্দের উপলব্ধিটা আগের থেকে কমে আসছে। আমাদের সময়ে আনন্দের উপকরণ কম ছিলো, কিন্তু আনন্দের উপলব্ধি ছিলো আকাশ ছোঁয়া।
রংপুরের মেয়ে বন্যা মা-বাবার উৎসাহে চাচা আবদুল আলীর কাছে গান শেখা শুরু করেন। পরে গান শেখেন ছায়ানটের ড. সানজীদা খাতুন ও আতিকুল ইসলামের কাছে। বুলবুল একাডেমিতেও গান শিখেছেন।
এছাড়া ভারত সরকারের কাছ থেকে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে তিনি চলে যান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনে। সেখানে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, শান্তিদেব ঘোষ প্রমুখের তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রসংগীত শেখেন।
দীর্ঘ এই পথচলায় অর্জনও কম নয়। দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার ও সম্মাননার অধিকারী তিনি। এসব নিয়ে তিনি বলেন, এগুলো আশির্বাদ। ঈশ্বরের আশির্বাদ, আমার গুরুদের আশির্বাদ, আমার বাবা মায়ের আশির্বাদ।