বিদেশহাইলাইটস

ধর্ষণের প্রমাণে ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করল লাহোরের হাইকোর্ট

 পাকিস্তানে অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েও মামলা-মোকদ্দমার হয়রানির কথা চিন্তা করে ঘটনা চেপে যান। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানে অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েও মামলা-মোকদ্দমার হয়রানির কথা চিন্তা করে ঘটনা চেপে যান। ছবি : সংগৃহীত

ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী ও শিশুর শারীরিক পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত তথাকথিত ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তানের লাহোরের হাইকোর্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ধর্ষণ প্রমাণে শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির কোনো বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই এবং এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এবং জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এসব তথ্য জানিয়েছে।

মানবাধিকারকর্মীরা এই পদ্ধতি বন্ধে একটি মামলা করেন। সেই মামলার শুনানি শেষে গতকাল সোমবার লাহোরের হাইকোর্ট এই রায় দেন। পাঞ্জাব প্রদেশে এটি কার্যকর হবে। তবে পাকিস্তানে এই পদ্ধতি নিষিদ্ধের রায় এটিই প্রথম। ৩০ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি আয়েশা এ মালিক বলেন, ‘কুমারিত্ব পরীক্ষার এই চর্চা ভুক্তভোগী নারীর আত্মমর্যাদায় আঘাত হানে।’ নারী অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন, ধর্ষণ প্রমাণে ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ একটি অযৌক্তিক এবং অমানবিক পরীক্ষা। এর মাধ্যমে ভুক্তভোগীকে আরেকবার ধর্ষণের শিকার হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের তথ্যমতে, দেশটিতে প্রতি বছর শত শত নারী ধর্ষণের শিকার হন। কিন্তু আইনি দুর্বলতার কারণে খুব কম ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়। তাছাড়া অনেক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েও মামলা-মোকদ্দমার হয়রানির কথা চিন্তা করে ঘটনা চেপে যান।

ডিসেম্বরে ধর্ষণবিরোধী নতুন আইনের মাধ্যমেই আসলে এই পদ্ধতি নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। তবে ওই আইনে ধর্ষণের পর ক্ষত পরীক্ষায় ব্যবহারিক উপায় অবলম্বনের বৈধতা রাখা হয়।

লাহোরের মতো সিন্ধু হাইকোর্টেও একই রকম একটি মামলা চলছে। দেশটির নারী অধিকারকর্মীরা আশা করছেন, লাহোরের দৃষ্টান্ত দেশজুড়ে এই পদ্ধতি নিষিদ্ধে কাজে লাগবে।

২০১৩ সালে ভারত এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ তথাকথিত এই ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ পদ্ধতি নিষিদ্ধ করে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button