করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন রূপের সংক্রমণ ছড়ানোর খবর সামনে আসার পর অনেক দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যুক্তরাজ্যে। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ার অন্তত ৩৪টি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে ফ্রান্স। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, যুক্তরাজ্য ছাড়াও ভাইরাসের নতুন প্রজাতিটি পাওয়া গেছে ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস এবং অস্ট্রেলিয়াতে। এছাড়া, দক্ষিণ আফ্রিকায় মিলেছে আরও একটি প্রজাতি। বৃটেনে জারি হয়েছে টিয়ার ৪ লকডাউন। লন্ডনসহ দেশের এক তৃতীয়াংশ অঞ্চলজুড়ে এই লকডাউন কার্যকর হয়েছে। যদিও ঘোষণায় বলা হয়েছে, আগামি ৩১ ডিসেম্বর এই লকডাউনের বিষয়টি আবারো পর্যালোচনা করা হবে তবে এটি কয়েক মাস ধরে জারি থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এমন পরিস্থিতিতে ভীত বাংলাদেশও। তবে এখনই ব্রিটেনের সঙ্গে আকাশ পথ পুরোপুরি বন্ধ করে না দিলেও বাংলাদেশ সরকার সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বিষয়টির দিকে।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) করোনার নতুন এই রূপের সংক্রমণ বিষয়ে বাংলাদেশের করণীয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ না করে সংক্রমণ ঝুঁকি প্রশমনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করেছে, তারা নিজেদের স্বার্থে বন্ধ করেছে। কিন্তু আমাদের অর্থনীতির কথা ভাবতে হবে। একইসঙ্গে অনেক মানুষ দেশের বাইরে থাকে। তাদের জন্য এয়ার কানেকক্টিভি দরকার আছে। এখন বর্তমানে যে পরিস্থিতি রয়েছে, আমার মনে হয় না ফ্লাইট বন্ধ করার সময় এসেছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, যে পরিস্থিতি চলছে তাতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিমানবন্দর বন্ধের কোনো কারণ দেখা যায়নি। আর বিমানবন্দর বন্ধ করা হবেও না। তবে আমাদের কার্যক্রম প্রয়োজনে আরও জোরদার করা হবে।
এর আগে সচিবালয়ে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ইস্যুতে বাংলাদেশ এখনো ফ্লাইট বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। শিগগিরিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন সংক্রমণ নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই চলছে আলোচনা। নতুন ধরনের এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার হার অনেক দ্রুত। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি খুব বেশি প্রাণঘাতী বলে তথ্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি।বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলো প্রয়োগ করে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।