জেলার খবরহাইলাইটস

ফুলবাড়ীতে বিদ্যালয়ের দখলে থাকা শ্মশানের জায়গা দখল মুক্ত

ছবি: ভালোসংবাদ
ছবি: ভালোসংবাদ

ফুলবাড়ী: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্ধারিত শ্মশানের জায়গায় টয়লেটের টেঙ্কিসহ বিদ্যালয়ের স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। পৌরএলাকার সুজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পার্শ্বে অবস্থিত শ্মশান মন্দিরের জমিতে বিদ্যালয়ের স্থাপনা নির্মাণে বাঁধা প্রদানসহ গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় নিজ অংশ দখলে নিয়েছে শ্মশান কালী মাতার মন্দির পরিচালনা কমিটি।
জানা যায়, সুজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পার্শ্বে ৫৪ শতক নির্ধারিত জায়গা রয়েছে শ্মশান কালী মাতার মন্দিরের। যার দাগ নং- ৬৫৪, জেল নং- ৪৮ এবং খতিয়ান ৪, ৫, ৬, ৭, ৯।
শ্মশান কালী মাতার মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি দীপু প্রামাণিক জানান, নদী থেকে শ্মশানের জায়গাটি দূরবর্তী হওয়ায় পূর্বে সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কবর দেয়া হতো। দীর্ঘদিন ওই জমিটি শ্মশান মন্দির ব্যবহার না করার সুযোগ নিয়ে ওই কবরের ওপরে টয়লেটের টেঙ্কি নির্মাণ কাজ করে বিদ্যালয় কমিটি। নির্মাণ কাজে বাঁধা দিলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশ্বাস দেন শ্মশান মন্দিরকে চাঁদপাড়ায় জায়গা দেওয়ার। পরে সেখানে টয়লেটের টেঙ্কিসহ ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করে বিদ্যালয়। সংসদ সদস্যের দেওয়া জমিটি দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা করেও দখলদারের কাছ থেকে দখলে নিতে পারেনি মন্দির পরিচালনা কমিটি। বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের খেলাধূলার কারণে মন্দির কমিটি এতোদিন জায়গাটি দখলে নেয়নি। বর্তমানে আবারো সুজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্বের ওই জমিতে পানি ঘর নির্মাণ করা হলে সহ সভাপতি খোকন মহন্ত, সাধারণ সম্পাদক প্রবীর দত্ত, সহ সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন বর্মন, সুজন সরকার এবং রতন চক্রবর্তীসহ শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এসে বাঁধা প্রদান করে জায়গাটি নিজেদের দখলে নিয়েছে।
সুজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসকে মোহাম্মদ আলী দুলাল জানান, ওই জমিতে পূর্বের প্রধান শিক্ষক টয়লেটের টেঙ্কি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু তখন শ্মশান মন্দির কমিটি বাঁধা দেননি। পরে তিনি যখন সেখানে ওয়াশ ব্লক নির্মাণ করেন তখন মন্দির কমিটি বাঁধা দেন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেত্রীবৃন্দের সাথে বসলে ওই স্থানটি বিদ্যালয়কে ভোগ করতে বলে অন্যস্থানে শ্মশান মন্দিরকে জায়গা দেন সংসদ সদস্য। দীর্ঘদিন থেকে চেষ্টা করেও সংসদ সদস্যের দেয়া জায়গাটি দখলে নিতে না পারায় তারা আবারো স্কুলের পাশ্বের জায়গা দখলে নিয়ে ভিত্তি দেয়। পরে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নাজমুল হাসান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাথে পরামর্শ করে ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ এসে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর কাজে বাঁধা প্রদান করেন। তবে বিদ্যালয়ের পার্শ্বে অবস্থিত মন্দিরের জায়ায় বিশুদ্ধ পানীর ব্যবস্থা করতে পানি ঘর নির্মাণ করছে একটি বেসরকারি সংস্থা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসাম্মৎ হাসিনা ভূঁইয়া বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষয়টি জেনে ইউএনও এবং থানার ওসি জানানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ইউএনও বরাবর একটি আবেদন দিতে বলা হয়েছে এবং থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বিয়ষটি জেনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোসহ ইউএনওকে অবগত করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জেনেছি তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পাদনা
ওয়াহিদুল ইসলাম ডিফেন্স

এমন আরো সংবাদ

Back to top button