দীর্ঘ ৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সন্মেলন
ইলেকশন না সিলেকশনে হবে নেতা নির্বাচন তা নিয়ে চলছে জল্পনা
জয়পুরহাট: দীর্ঘ ৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সন্মেলন। ২দফা তারিখ পিছিয়ে অবশেষে ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে কাঙ্খিত কাউন্সিল। কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে সভামঞ্চ ও প্যান্ডেল। প্রধান অতিথি হিসাবে অংশ নিবেন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের। সন্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান এবং প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা। সভাপতিত্ব করবেন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এ্যাড: সামছুল আলম দুদু এমপি।
সন্মেলনে ১০ হাজার নেতা-কর্মী অংশ নিবেন। সন্মেলনকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ দেখা গেছে তবে তাদের কেউ কেউ নিজ নিজ পছন্দের নেতারা নেতৃত্ব পাক এমন প্রত্যাশা করছেন। আবার কেউ বলছেন, সব সিদ্ধান্ত নিবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। দলের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। তবে পুরাতন নেতৃত্বের পরিবর্তন চান অনেকেই। অপেক্ষা করছেন কে জেলা আওয়ামী লীগের আগামী দিনের হাল ধরবেন । এ সম্মেলনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা কাউন্সিলর নেতাকর্মীদের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তবে কাউন্সিলরা সরাসরি ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করতে পারবেন কিনা এ বিষয়ে স্পষ্ট হতে পারছেন না। কারন কেন্দ্র থেকেই সিদ্ভান্ত নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সম্মেলনে ঘোষনা দিতে পারেন।
সম্মেলন সফল করতে এ্যাড: মোমিন আহমেদ চৌধুরীকে আহবায়ক ও এস এম সোলায়মান আলীকে সদস্য সচিব করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিসহ ৭টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান, সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী।
ক্ষমতাসীন দলের এই সম্মেলনকে ঘিরে ব্যানার ফেস্টুন আর তোরণে সাজানো হয়েছে গোটা শহর। নেতা-কর্মীদের আনাগোনায় মুখর দলীয় কার্যালয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে আটজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ছয়জন জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে ত্যাগী ও যোগ্য নেতৃত্বের আশা তৃণমূল কর্মীদের।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, এ সম্মেলনে ১৯৬ জন কাউন্সিলর। সম্মেলনে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়াল বক্তব্য দিবেন এবং কেন্দ্র থেকেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করে ঘোষণা দেবেন অথবা সিদ্ধান্ত নিয়ে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি এডভোকেট সামসুল আলম দুদু এমপি, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য আরিফুর রহমান রকেট, সহ-সভাপতি গোলাম হাক্কানী, অধ্যক্ষ খাজা শামসুল ইসলাম, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি, এডভোকেট মোমেন আহমেদ চৌধুরী জিপি। এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সদস্য ও পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব, আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর।
জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের পদে থাকলেও এখন পর্যন্ত কোন বড় চেয়ার পাননি অন্যদিকে বর্তমান সাধারন সম্পাদক ২০০৬ সাল থেকে সাধারন সম্পাদকের পদে আছেন।
বিভিন্ন কমিটি, উপকমিটির মাধ্যমে সন্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু জানান, দলীয় কোন্দল ও গ্রুপিং থাকা সত্ত্বেও সন্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সন্মিলিতভাবেই। বলেন, কাউন্সিলর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের যৌথ বা একক সিদ্ধান্তেই আসতে পারে নতুন নেতৃত্ব।
৩ বছরের পরিবর্তে ৬বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে সন্মেলন। জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর। সম্মেলনে সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুকে সভাপতি এবং এসএম সোলায়মান আলীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়ছিল।