কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী): এ্যাকুয়েডাক্টের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে বগুড়া সেচ খালের পানি। নিজ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে চাড়ালকাটা নদীর সাদা স্বচ্ছ জলরাশি। পাশাপাশি সারিবদ্ধ করে লাগানো দেশী-বিদেশী নানা প্রজাতির সৌন্দর্যের ডালি মেলানো গাছ অপরুপ নান্দনিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। চারদিকে ফসলের সবুজ রঙ্গের চাঁদরে ঢাকানো। যেদিকে চোখ যায় সবুজ আর সবুজ। নদীতে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দশর্ণাথীদের মন কেড়ে নেয়। পাখিদের কলকাকলী, নদীর এঁকেবেঁকে বয়ে চলা ঢেউ দিয়েছে অপরুপ সৌন্দর্য। পাশে রয়েছে চা বাগান। যা দশর্ণাথীদের মুগ্ধ করছে। দর্শর্ণাথীদের বসার জন্য রয়েছে টাইলস করানো চেয়ার। ভ্রমণ পিপাসুরা খুঁজে ফিরেন সবসময় নির্মল পরিবেশ মন্ডিত এমনিই একটি নান্দনিক স্থান। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার ভ্রমণ পিপাসু মানুষ বিনোদন স্পট হিসেবে ওই স্থানটিকে বেঁচে নিয়েছে। এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করেত। সম্প্রতি নদীর জেগে ওঠা ২৩ একর চর কালীবাড়ি নামে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতি বছর এখানে একটি মেলাও বসছে। সম্ভাবনাময় বিনোদন ও পিকনিক স্পট হতে পারে কিশোরগঞ্জের চাড়ালকাটা নদীর উপর নির্মিত এ্যাকুয়েডাক্টটি।
কিশোরগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে ওই স্থানে নদীর উপর নির্মাণ করা হচ্ছে ১৯০ মিটার একটি গার্ডার ব্রীজ। চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। এ্যাকুয়েডাক্টটি রক্ষার জন্য উত্তর ও দক্ষিন পাশ্বে রয়েছে দুটি বাঁধ। বাঁধের উপর লাগানো হয়েছে দেশী-বিদেশী নানা প্রজাতির ফুল ও কাঠের গাছ। যেন সবুজের সমারোহ। গাছের সারি, পাখিদের কলকাকলী, নদীর এঁকেবেঁকে বয়ে চলা ঢেউ, এ্যাকুয়েডাক্টের সন্নিকটে একটি বহুতল বিশিষ্ট উচ্চ বিদ্যালয় দেখে মুগ্ধ হবে যে কেউ। এ্যাকুয়েডাক্টের দু’ পাশ্বে দাড়ালে শোনা যায় সম্প্রতি খনন করা নদীর ঢেউয়ের গর্জন আর বির্স্তিন এলাকাজুড়ে সোনালী ফসলের মাঠ। সেখানে আপন মনে কাজ করছে কৃষাণ-কৃষাণীরা। কখনও কখনও তারা গেয়ে উঠছে ভাওয়াইয়া গানের কলি। নদীর পশ্চিম ও পূর্ব দিকে তাকালে দেখা যাবে জেলেদের মাছ আহরণের দৃশ্য আর সন্ধ্যা নেমে আসলেই শোনা যায় শেয়ালের হুক্কাহুয়া ডাক। পাশে রয়েছে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পটির গ্রামের নামটিও চমৎকার। যা আশি গ্রাম নামেও পরিচিত। আরও দক্ষিণ পূর্বে রয়েছে সিনহা গ্রুপের একটি বিশাল চা বাগান। এসব মনকারা দৃশ্য দেখতে এখানে ছুটে আসছে ভ্রমণপ্রেমীরা। ফলে মানুষের পদচারণায় সবসময় মুখর হয়ে থাকছে ওই স্থানটি। এছাড়া এখানে ভ্রমণ পিপাষুদের বিশ্রামের জন্য করা হয়েছে বসার চেয়ার।
সৈয়দপুর উপজেলার খিয়ার জুম্মাপাড়া থেকে ফুচকা বিক্রি করতে আসা আলমগীর হোসেনের সাথে এসময় কথা হলে তিনি জানান- ফুচকা, চটপটি ও বার্গাারসহ কয়েক প্রকার তৈরী খাবার তিনি প্রতিদিন নিয়ে আসেন। এসব খাদ্য সামগ্রী তিনি বিক্রি করেন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এতে তার দৈনন্দিন লাভ আসে ৭ থেকে ৮শত টাকা।
ঘুরতে আসা ২ বন্ধু মনির হোসেন ও সুর্য সেন বলেন, কিশোরগঞ্জে এতো সুন্দর একটি জায়গা রয়েছে তা আগে আমরা জানতাম না। মনমুগ্ধকর পরিবেশ, গাছে গাছে পাখির কলোরব, নির্মল বাতাস আর এ্যাকুয়েডাক্টের উপর দিয়ে বয়ে চলা পানি দেখতে খুবই ভালো লাগে। স্থানটি সত্যিই অসাধারণ। এখানে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে পিকনিকেও আসা মন্দ হবে না। তাদের দাবী এখানে একটি সৌচাগার স্থাপন করা হলে ভ্রমণপ্রেমীদের সুবিধা বাড়বে।
বাহাগিলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ বলেন- ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য সরকারী উন্নয়ণ প্রকল্প থেকে অতি তারাতারি একটি সৌচাগার স্থাপন করা হবে। সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোফাখখারুল ইসলাম বলেন- ইতিমধ্যে ওই স্থানে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য বসার চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে। আগামীতে ওই জায়গায় একটি পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে।