টেস্ট ক্রিকেটে ২০ বছর : সাফল্য কতটা?
২০০০ সালের আজকের দিনে টেস্ট আঙিনায় পা রাখে বাংলাদেশ। ক্রিকেটের দীর্ঘ সংস্করণে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে শুরু হয় এই যাত্রা। দেখতে দেখতে এই স্বপ্নযাত্রার ২০ বছর হয়ে গেল। দীর্ঘ এই সময়ে সাদা পোশাকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কতটা? কিংবা ব্যর্থতার পাল্লাই কতটুকু? তার কিছু হিসাব দেখে নেওয়া যাক। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যায়, এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তির পাল্লাই বেশি। ২০ বছরে ১১৯ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, যার মধ্যে জিতেছে মাত্র ১৪ ম্যাচে। ১৬ ম্যাচে ড্র করেছে। আর হেরেছে ৮৯ ম্যাচ। এর মধ্যে ৪৫টি ম্যাচে আবার ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জা পেয়েছে বাংলাদেশ। আইসিসির টেস্ট খেলুড়ে ১২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নবম।
তবে এত হতাশার মধ্যে প্রাপ্তিও আছে। নিজেদের ডেরায় অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যে শক্ত প্রতিপক্ষকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে আছে তামিম ইকবালের অনন্য রেকর্ড। টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরি কিংবা দশ উইকেট পাওয়ার রেকর্ডও বাংলাদেশের দখলে।
একনজরে টেস্টে কিছু রেকর্ড
১. টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান বাংলাদেশের মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০০১ সালে টেস্ট অভিষেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১৭ বছর ৬৩ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করেন আশরাফুল। যে রেকর্ড এখনো কেউ ভাঙতে পারেননি।
২. সাদা পোশাকে সবচেয়ে কম বয়সে ১০ উইকেট নেওয়া ক্রিকেটারও বাংলাদেশের। ২০০৫ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১২ উইকেট নেওয়া এনামুল হক জুনিয়রের বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর ৪০ দিন।
৩. টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন সাকিব আল হাসান। এ তালিকায় প্রথম দুজন হলেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইয়ান বোথাম ও পাকিস্তানের ইমরান খান।
৪. টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিক করা ক্রিকেটার বাংলাদেশের। ২০১৩ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন সোহাগ গাজী।
৫. ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১০৩ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলা ক্রিকেটার হলেন বাংলাদেশের আবুল হাসান। ২০১২ সালে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েন তিনি।
তবে এসব প্রাপ্তি সত্ত্বেও হতাশা যথেষ্টই। এখনো এই ফরম্যাটে নিজেদের সবটা মেলে ধরতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। এই তো কয়েক মাস আগেই পাকিস্তানে বাজেভাবে হেরে এসেছে লাল-সবুজের দল। তার আগে ভারত সফরে দেখিয়েছে চরম ব্যর্থতা।আর সাফল্য যতটা এসেছে, তার বেশিরভাগই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ১৪ ম্যাচের মধ্যে জিম্বাবুয়েকে সাতটি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে চারটি টেস্টে। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে একটি করে টেস্ট।