শ্রীপুর পৌর নির্বাচন ঘিরে আওযামীলীগ বিএনপি নেতাদের দৌড়ঝাঁপ
গাজীপুর: দেশের বিশেষায়িত পৌরসভার মধ্যে একটি শ্রীপুর। স্থানীয় সরকারের এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন শুরু হওয়ায় আগাম প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন সরকার ও বিরোধীদলীয় প্রার্থীরা। তারা একদিকে ভোটারদের মন জয় করতে যেমন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন, তেমনি কেন্দ্র থেকে নিজ মনোনয়ন নিশ্চিতেও সচেষ্ট রয়েছেন। আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত শ্রীপুর পৌরসভা ২০০০ সালে গঠনের পর থেকেই আওয়ামী প্রার্থী আনিছুর রহমান জয়ী হয়ে আসছেন। তবে পৌরসভা গঠনের দীর্ঘ ২০বছর অতিবাহিত হলেও কাঙ্খিত উন্নয়ন না হওয়ায় এবার ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে ভোট যুদ্ধে ভোটারদের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। বর্তমান মেয়রের ব্যর্থতায় বিকল্প প্রার্থীরা মনোনয়নের আশা দেখছেন। শিল্পকারখানা বেষ্টিত শ্রীপুরে মেয়র প্রার্থী ও ভোটারদের সাথে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে।
নির্বাচন অফিসের দেয়া তথ্য মতে, বর্তমান সরকার বিগত ২০০০সালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শ্রীপুরকে পৌরসভায় রুপান্তর হয়। এর পর সর্বশেষ তৃতীয় পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বিগত ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নিয়ম অনুযায়ী চলতি মাসে এই পৌরসভা নির্বাচনের উপযোগী হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য মতে, সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৬৮হাজার ৪৭০জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৪ হাজার ১৯৯জন, মহিলা ৩৪ হাজার২৭১জন। পৌরসভা গঠনের পর ৩টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এখানে।
চতুর্থ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান মেয়র জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান এবার কোমর বেধেই মাঠে নেমেছেন। তবে তাকে ছাড় দিতে নারাজ নিজ দলীয় প্রায় পাঁচ জন প্রার্থী। নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে কয়েকবছর ধরেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন। করোনাকালে তিনি পৌর বাসীর পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। সমাজের অসহায় মানুষের খাদ্য সহায়তা,করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়ে সবার মধ্যে নিজের অবস্থান তৈরী করে নিয়েছেন তিনি। করোনকালে অসহায়দের পাশে থেকে তিনিও নিজেও করোনায় আক্রান্তও হন। জেলা ছাত্রলীগের একজন দক্ষ সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী হিসেবে রবিনের সুনাম রয়েছে জেলা জুড়েই।
এছাড়াও নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মন্ডল বুলবুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা, হারুনুর রশিদ ফরিদ, প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা ভিপি আহসানউল্লাহ, ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মাসুদ আলম ভাঙ্গী।
এদিকে শ্রীপুরে অন্যান্য দলের দলের তেমন কোন প্রভাব না থাকায় বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে মাঠে রয়েছেন পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক শহীদ ঊল্লাহ শহীদ। তার দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত থাকায় প্রতিদিন কর্মী সমর্থক নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
ভোটারদের ভাষ্য অনুযায়ী, শিল্প কারখানার সৌজন্যে ব্যাপক রাজস্ব আয় হয় এ পৌরসভায়। অথচ পৌরসভায় এখনো নাগরিক সুবিদা নিশ্চিত হয়নি। বিশেষ করে পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই শোচনীয়। জলাবদ্ধতা,ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা,বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে জনভোগান্তি প্রতিনিয়ত বাড়ছে।সাধারন মানুষ নৌকার প্রার্থীকে বারবার জয়ী করলেও নাগরিকদের কথা ভাবেননি কেউ। ধাপে ধাপে পৌরসভা তৃতীয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হলেও প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার ছিটেফোটাও নেই এখানে। দক্ষ নগরপিতা না পাওয়ায় অনিয়ম দুর্ণীতির কারনে ভঙ্গুর পৌরসভায় পরিণত হয়েছে। তাই ভোটাররা নাগরিক সুবিদা নিশ্চিতে এবার তারা দক্ষ প্রশাসক নির্বাচনের লক্ষে নবীন সচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন কাউকে আওয়ামী প্রার্থী হিসেবে প্রত্যাশা করেন।