প্রজনন মওসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ঢাকার বাজারে আসতে শুরু করেছে জাতীয় মাছ ইলিশ, দামও দেখা গেছে ভরা মওসুমের মতোই। শুক্রবার রাজধানীর বড়বাগ ও মিরপুর শাহ আলী কিচেন মার্কেটে বিভিন্ন আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। দীর্ঘদিন পরে বাজারে ইলিশ উঠায় ক্রেতাদের আগ্রহও ছিল বেশি। কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজি শুক্রবারও চড়া দামেই বিক্রি হয়েছে, যদিও সপ্তাহের মাঝামাঝিতে বেশ কিছু সবজির দাম কমেছিল। দামে বড় পরিবর্তন হয়েছে কাঁচা মরিচে, দীর্ঘ দিন কেজি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া মরিচের দাম ১০০ টাকার আশপাশে নেমেছে। এদিকে বাজারে লাল শাক, পুঁই শাকের আমদানি বাড়ার পাশাপাশি সরিষা শাক, কলমি শাক, ডাটা শাকসহ নতুন মওসুমের আরও কিছু শাক দেখা গেছে। মিরপুর বড়বাগে এসব শাক বিক্রি হচ্ছে প্রতি আঁটি ১৫ টাকায়। মাঝে লাল শাকের আঁটি ২০ টাকা ও তার বেশিতে বিক্রি হয়েছে। ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া পুঁই শাকের দামও কিছুটা কমেছে।
বড়বাগ বাজারে শাক কিনতে আসা গৃহিনী সোনিয়া আক্তার মনে করেন, বর্তমান বাজারের তুলনায় নতুন শাকের দাম ঠিকই আছে। বরং ঢেঁড়শ, মুলা, ফুল কপি, বাঁধা কপি, করলা, পেঁপেসহ অন্যান্য সবজির দাম আরও কমা উচিত। “মওসুমের শুরুতে শাকের দাম একটু বেশি থাকে। এখন যেটা ১৫ টাকায় আঁটি বিক্রি হচ্ছে, কয়েক দিন পর তা ১০ টাকায় নেমে আসবে। আমরা সব সময় ১০ টাকা আঁটিতেই শাক কিনে খাই,” বলেন তিনি। বাজারে সবজির দাম বেড়েছিল গত জুলাই মাসে কয়েক দফায় বন্যার কারণে। তবে কয়েক মাস আগে বন্যা শেষ হলেও চড়া দাম রয়ে যায়।
বড়বাগ ও শাহআলী মার্কেটে এদিনও প্রতিকেজি ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙা-চিচিঙ্গা ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রজনন মৌসুমের কারণে মাছ ধরা ও বিক্রিতে সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ইলিশ।
বাজারে নতুন করে দেখা গেছে কাঠ কচু, মেটে আলু ও পঞ্চমুখী ছড়া। তবে এসব সবজির দামও কেজি ৫০ টাকার কমে নেই। দুপুরে বড়বাগ বাজারে মাছ বিক্রেতা সেলিমকে দেখা যায় প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় ইলিশের দাম হাঁকাতে। কাছে গেলে তিনি বলেন, “কেজি ৭০০ টাকায় দিয়ে দেব। প্রতিটি ১২০০ গ্রামের উপরে আছে, মেপে নিয়ে দাম দেবেন।”এই বাজারে এদিন ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা, এক কেজি বা তার চেয়ে বড় আকারের ইলিশ ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আগের মতোই প্রতি কেজি ২৬০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে রুই মাছ। বড় আকারের (তিন কেজি) রুই-কাতল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায়। এছাড়া শিং মাছ ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, শোল মাছ ৩০০ টাকা, কই মাছ দেড়শ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হয়। বড়বাগে ইলিশ কিনতে আসা রবিউল হাসান মনে করেন, দীর্ঘদিন পর নদীতে ইলিশ ধরা শুরু হওয়ায় বাজারে নতুন পুরোনো মাছ মিলে মিশে গেছে। তাই ইলিশ কেনার সময় একটু দেখে-শুনে তাজা মাছ কেনা উচিত। বাজারে এখনও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ টাকায়। মিশর, তুরস্ক, চীন, থেকে আমদানি করা বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। দীর্ঘদিন ধরে প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া আদার দাম অনেকটাই কমে গেছে। বাজারে দেশি আদা বিক্রি হয়েছে কেজি ১০০ টাকার আশপাশে।
