১০টি রহমত কামিয়ে নিন একবার দরুদ পড়ে
বান্দার জন্য যে সময় বা যা কিছু দরকার, সে সময় ও তা-ই দিয়ে থাকেন মহান স্রষ্টা বান্দার কল্যাণের জন্য। আল্লাহতায়ালা সূরা ফুরকানের ৬২নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন- ‘আর তিনি এমন সত্তা, যিনি রাত ও দিনকে একে-অন্যের পশ্চাতে আসার আদেশ দিয়েছেন সেই ব্যক্তির জন্য, যে বুঝতে চায় অথবা শোকর আদায় করার ইচ্ছা করে।’ হিজরি সালের মাসগুলোর মধ্যে রবিউল আউয়াল মাস অন্যতম। এ মহান মাস মানব ইতিহাসে তথা মুসলমানদের জন্য উজ্জ্বলতম অধ্যায়। আমরা জানি, রবি অর্থ বসন্ত; শাওয়াল অর্থ প্রথম; অর্থাৎ প্রথম বসন্ত। আমাদের দেশে বসন্তকাল যেমন সবার প্রিয়, নতুন পত্র-পল্লবে ও গন্ধে বৃক্ষ যেমন শোভা লাভ করে, তেমনি আমাদের কাছে প্রিয় ছিল রবিউল আউয়াল বা প্রথম বসন্ত।
বসন্ত এলে যেমন গাছের পুরনো পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতার মাধ্যমে গাছপালা নতুন করে সজীবতা লাভ করে, তেমনি এ মাসে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের কারণে অতীতের সব নবীদের শরিয়ত বাতিল হয়ে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর শরিয়ত-রিসালাত নামক ইসলাম পূর্ণতা লাভ করে।
রবিউল আউয়াল মাস হচ্ছে ইসলামি বর্ষপুঞ্জির তৃতীয় মাস। সৈয়দ ইবনে তাউস তার আল ইকবাল নামক গ্রন্থে বলেন- রবিউল আউয়াল হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ; কেননা এ মাসেই নবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন।
এ মাস যে কারণে বিখ্যাত তা হচ্ছে- দোজাহানের বাদশাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালিন, রহমাতুল্লিল আলামিন বিশ্বনবী শেষ নবী ও উম্মতের জন্য শাফায়াতের কাণ্ডারি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ঘটেছিল এ মাসে।
যার জন্য ধন্য বিশ্বজগৎ; আলোকিত মরুপ্রান্তর যার কারণে চিরভাস্বর মদিনাতুল মোনাওয়ারাহ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেছেন- ‘সমগ্র বিশ্ব জগতের জন্য আপনাকে রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি।’
রবিউল আউয়াল মাসেই নবী (সা.) মা খাদিজাতুল কোবরাকে বিবাহ করেন। এ মাসে মদিনায় হিজরত করেন। এ মাসের ১৬ তারিখে মসজিদে কোবা নির্মাণ করেন।
নবী (সা.) বলেছেন, সে ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি ওই ব্যক্তির কাছে তার পিতামাতা, সন্তান ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হব। (মুসলিম)। অর্থাৎ নিজের জীবনসহ অন্যসব কিছুর চেয়ে রাসূল (সা.)কে বেশি ভালোবাসতে হবে।
এ মাসে বেশি বেশি দরুদ পড়তে হবে। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেন- যে আমার ওপর একবার দরুদ পড়বে, আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত বর্ষণ করবেন; তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন এবং তার জন্য ১০টি রহমতের দরজা খুলে দেবেন। (মুসনাদে আহমদ ও নাসাঈ)।