আগাম জাতের হাইব্রিড ধানে কৃষকের মুখে হাসি
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও): কার্তিকের শুরুতে যে মুহূর্তে নিম্ন, মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের নাকাল অবস্থা, চালের দাম যে সময়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ঠিক সে মুহূর্তে আমনের আগাম হাইব্রিড জাতের ধান কাটা শুরু হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে ফুটেছে হাসি। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আগাম জাতের ধান বাজারে চাহিদাও বেশি। আগাম জাতের আমন ধান কেটে ওই জমিতে রবিশষ্য আলু, সরিষা চাষ করবেন এই উপজেলার কৃষকেরা। এতেও একই জমিতে বছরে চারটি ফসল উৎপাদন করতে পারবেন কৃষক। এই ধান কৃষক পরিবারগুলোতে এনে দিয়েছে আনন্দের বন্যা সেই সঙ্গে আশ্বিন-কার্তিকের মঙ্গা’র প্রতিধ্বনিকে হটিয়ে দিতেও সক্ষম হয়েছে। বৃহস্পতিবার মালঞ্চা গ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ধান কাটার উদ্বোধন করেন পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজাউল করিম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম সারোয়ার হোসেন সহ অন্যান্যরা।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট ৩১ ব্লকে এবার ২৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে স্বর্ণা-৫, রনজিত, পায়জাম, হাইব্রিড, ব্রি-ধান-১১, ৯০, ৬২সহ বেশ কয়েকটি জাতের আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ মধ্য আষাঢ়ে লাগানো হয় এই ধান। মোট ১১৩ দিন পর কাটা শুরু হলো এই আগাম ধান। জমি তৈরী, সার, কীটনাশক সহ বিঘা প্রতি এ আবাদে খরচ পড়েছে ৯ হাজার টাকা। উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের কৃষক রবীন্দ্র নাথ রায় বলেন, তার ১ বিঘা জমিতে এবারে উৎপাদন হয়েছে ৩০ মন ধান। বর্তমানে বাজারে প্রতিমন ধান ১২ শ’টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, সে হিসেব মতে ৩০ মন ধান ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। ধানের খড় বিক্রি হবে ৭-৮ হাজার টাকায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম সারোয়ার হোসেন বলেন, এ অঞ্চলে আশ্বিন-কার্তিক মাসে মঙ্গা বিরাজ করে এবং এ ২ মাস খেটে খাওয়া মানুষের হাতে কাজকর্ম থাকে না। কৃষি মজুররা এ সময়ে বেকার থাকায় অর্থ ও খাদ্যকষ্টে ভোগেন। কিন্তু আগাম হাইব্রিড জাতের ধান কাটা শুরু হওয়ায় এখানে আর মঙ্গার প্রভাব পড়ছে না। সংশ্লিষ্টদের অভাব দূরীভূত হয়েছে।