নিউইয়র্ক: ‘মুহাম্মদ (সা) দ্যা মডেল অব ওয়ার্ল্ড পিস এন্ড সোস্যাল জাস্টিস’ শ্লোগানে এবার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ১৩তম ইন্টারন্যাশনাল ইউনাইটেড সীরাহ কনভেনশন-২০২০’। আমেরিকান মুসলিম সেন্টার (এএমসি) আয়োজিত এই কনভেনশনে দেশ-বিদেশের অতিথি বক্তগণ তাদের বক্তব্যে তথ্যবহুল আলোচনার মাধ্যমে প্রিয় নবীর (সা:) মর্যাদা ও তাঁর সর্বোত্তম আদর্শ, নান্দনিকতা এবং বর্ণাঢ্য জীবনের উপর আলোকপাত করেন। বক্তারা বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা:) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী, বর্তমান বিশ্ব ও অনাগত ভবিষ্যতের একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর দিক নির্দেশনা অনুসরণের মাধ্যমে নিহিত আছে মানুষের সকল সমস্যার সমাধান। বক্তারা ব্যক্তি জীবন থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রেই মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
সিটির জ্যামাইকাস্থ আমেরিকান মুসলিম সেন্টারে (৮৯-১৪ ১৫০ স্ট্রিট) গত ২৫ অক্টোবর রোববার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কনভেনশনের অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় আলোচনা এবং কেরাত, গজল সহ সীরাত সংস্কৃতির আয়োজন।
আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের চেয়ারম্যান মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও এএমসি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ফার্মাসিষ্ট আমির খান। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন এএমসি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ডা. মুহাম্মদ হাদি, মির্জা মশিউর রহমান, টাইম টেলিভিশন-এর সিইও আবু তাহের, ইমাম মাশুক, মসজিদ মিশন (হাজি ক্যাম্প মসজিদ) পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আখতার রহমান টিপু, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন, নাইম রশিদ, সিটি কাউন্সিল ২০২১ ডিষ্ট্রিক ৩৯ এর প্রার্থী মামনুল হক।
কনভেশনে ইংরেজীতে বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমান মালেক, মুফতি রফিক ফায়েজ, মুফতি উবাইদুল্লাহ্ এবং লন্ডন থেকে লাইভে যুক্ত হন আল্লামা ইউসুফ বেগ। বাংলায় বক্তব্য রাখেন টেক্সাস থেকে মুফতি মোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক মওলানা মুহিব্বুর রহমান, লন্ডন থেকে লাইভে যুক্ত হন শেখ মাহমুদুল হাসান, আল্লামা হাসান জামিল হাফিজুল্লাহ ও বাংলাদেশ থেকে লাইভে যুক্ত হন শেখ মামুনুল হক প্রমুখ।
কনভেনশনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ উমর ফারুক এবং যৌথভাবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মুফতি আব্দুল মালেক, মৌলানা মনজুরুল করিম, ফয়সাল নেওয়াজ ও আতাউর রহমান।
মূলত: ভার্চুয়াল কনভেনশনেল আয়োজন হলেও করোনা পরিস্থিতি জনিতকরনে স্বাস্থ বিধি মেনে সীমিত আকারে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ এএমসি ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। কনভেশনের বিশেষ আহবান ছিলো-
“বিশ্ব নবীর বিশ্ব উম্মাত
ঐক্যবদ্ধ মুসলিম মিল্লাত”।
কনভেনশনে বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা মহানবী (সা.) কে সব দিক থেকেই শ্রেষ্ট মানব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তার জন্ম থেকে শুরু করে জীবনাচার এবং মৃত্যু পর্যন্ত সব কিছুই মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত ও কল্যাণকর। মুহম্মদ (সা.) নির্দিষ্ট কোন সময়ের জন্য বা নির্দিষ্ট কোন গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট কোন জায়গা বা দেশের জন্য নবী ছিলেন না। তিনি ছিলেন সকলের নবী, নবীদের নবী। তিনি কেয়ামত পর্যন্ত নবী। তাই তাঁর জীবন চরিত অবলম্বন করে জীবন পরিচালিত করতে পারলেই ইহকাল ও পরকালে শান্তি পাওয়া যাবে। ১৪৮২ বছর পরও পৃথিবীর সকল স্থানেই মহানবীর (সা.) গুণগান হচ্ছে। বিশ্বের বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ তাঁকে অনুস্মরণ, অনুকরণ করছেন। তিনি সর্বকালের জন্যই মুসলিম-অমুসলিম সকল মানুষের জন্য অনুস্মরণীয়, অনুকরনীয়। সকলকেই তাঁর আলোয় আলোকিত হওয়া দরকার। মহানবীর আলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার দায়িত্ব নবী প্রেমিকদের। বিশ্বায়নের এই যুগে তাঁর আর্দশ তুলে ধরা আরো বেশী প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ নশীদ সন্ধ্যায় সুরেলা কন্ঠে ইসলামী সঙ্গীত পেশ করেন জনপ্রিয় শিল্পী ইকবাল হোসেন জীবন ও সালাহউদ্দীন রাসেল। টাইম টেলিভিশন কনভেনশনের মূল পর্ব সরাসরি সম্প্রচার করে।