লাইফস্টাইল

টনসিলে ইনফেকশন হলে করণীয়

 ছবি সংগৃহীত
ছবি সংগৃহীত

টনসিলে ইনফেকশন সব বয়সী মানুষের হতে পারে। বিশেষ শীত ও বৃষ্টির দিনে এই রোগ বেড়ে যায়। ঘনঘন গলাব্যথা, জ্বর, খাবার খেতে অনীহা টনসিলে ইনফেকশনের অন্যতম লক্ষণ। খাবার ঠিক মত গিলতে না পারায় এ সময় খাওয়া বন্ধ করে দেয় অনেক রোগী। ফলে পানিশূন্যতা ও ক্যালরির অভাব দেখা দেয়।

টনসিল কি?

টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটা অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে তারা অবস্থান করে। এদের নাম লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড। এই টনসিলগুলোর কোনো একটির প্রদাহ হলেই তাকে বলে টনসিলাইটিস।

টনসিলের কাজ 

এর প্রধান কাজ জন্মের পূর্বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করা। টনসিনের সমস্যা হলে রোগী ঘনঘন সর্দিকাশিতে ভোগে এবং টনসিল ও এডেনায়ড বড় হয়ে যায়।

সুস্থ ব্যক্তি যাদের ঘনঘন সর্দিকাশি হয় না কিংবা টনসিলে ইনফেকশন হয় না; তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টনসিল ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে যায় ও একসময় এ অঙ্গ অকার্যকর হয়ে পড়ে।

টনসিল ইনফেকশনের উপসর্গ

১. ঘনঘন গলাব্যথা ও সঙ্গে জ্বর। সাধারণত গলাব্যথার সঙ্গে জ্বর থাকে, যা অনেক সময় ১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত হতে পারে।

গলাব্যথার কারণে শিশু খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। অনেক সময় শিশুর দেহে পানিশূন্যতা ও ক্যালোরির অভাব দেখা দিতে পারে।

২. ঘনঘন টনসিলে ইনফেকশন হলে এটি আকারে বড় হয়ে যায় এবং শ্বাসের রাস্তা ও খাদ্য গ্রহণের পথ বাধাগ্রস্ত হয়।

৩. অনেকে ঘুমানোর সঙ্গে সঙ্গে নাক ডাকতে শুরু করে। নাক ডাকা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শ্বাসের রাস্তা ক্রমাগত ছোট হতে হতে যখন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়; তখন শ্বাস নেয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে রাখে। এ পর্যায়ে শরীরের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

৪. শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা দ্রুত কমতে থাকে এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই শরীর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে উপনীত হবে। এ সময়ে শরীরের ভেতরের জীবন বাঁচানোর প্রক্রিয়াগুলো (রিরিক্স মেকানিজম) সক্রিয় হয়ে ওঠে।

৫. এডেনয়েড গ্রন্থি বড় হলে ঘনঘন সর্দি-কাশি ও ঠাণ্ডায় ভোগে এবং ঠাণ্ডা সহজে সারতে চায় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট এবং রাতের বেলায় কাশিতে ভোগে।

৬. গলা বা নাকের প্রদাহ কানের ভেতর চলে যায়। ফলে কানের মধ্যে ঘনঘন ব্যথা হয় এবং কানে কম শোনে। অনেক সময় ব্যথা ছাড়াও কানের মধ্যে পুঁজ বা পানি জমতে পারে।

৭. কানের ভেতর ঘনঘন ইনফেকশন বা কানের ভেতর লম্বা সময় পুঁজ পানি জমা থাকার ফলে কানের পর্দাগুলো ক্ষতিসাধিত হয় এবং একসময় পর্দা সম্পূর্ণরূপে ছিদ্র হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কান পাকা রোগ এবং শ্রবণের সমস্যা এভাবে শুরু হয়ে থাকে।

৮. টনসিলে ঘনঘন ইনফেকশন থেকে বাতজ্বর (রিউম্যাটিক ফিভার) হতে পরে। এ রোগের ফলে হার্টের এবং কিডনির মারাত্মক ক্ষতিসাধিত হতে পারে। অল্প বয়সে হার্টের বাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়া বা কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার (কিডনি ফেইলিওরের) অন্যতম প্রধান কারণ বাতজ্বর, যা টনসিলে ইনফেকশন থেকেই হয়ে থাকে।

কী করবেন

এসব উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


টনসিলে ইনফেকশন হলে করণীয়

এমন আরো সংবাদ

Back to top button