২৭ আগস্ট থেকে আরও ১৮ জোড়া ট্রেন চালু
যাতায়াত স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে আরও ১৮ জোড়া (৩৬টি) যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে আন্তনগর, মেইল ও কমিউটার ট্রেনও রয়েছে। এগুলো ২৭ আগস্ট থেকে চালু হবে। করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর একসঙ্গে এত ট্রেন চালু করা হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে ১৬ আগস্ট থেকে ১৩ জোড়া ট্রেন চালু করা হয়। এর আগে ১৭ জোড়া ট্রেন চলছিল। ২৭ আগস্টের পর সব মিলিয়ে ৪৮ জোড়া (একই গন্তব্যে আসা-যাওয়া মিলিয়ে একটা ট্রেনকে এক জোড়া ধরা হয়)।
রেলের উপপরিচালক (টিটি) খায়রুল কবিরের সই করা একটি আদেশে নতুন ট্রেন চালুর কথা বলা হয়েছে। নতুন এসব ট্রেনের মধ্যে অর্ধেক পূর্বাঞ্চলে এবং অর্ধেক পশ্চিমাঞ্চলে। অন্তত ৯ জোড়া ট্রেনের গন্তব্য ও যাত্রার স্থান ঢাকার বাইরে। বাকি ৯ জোড়া ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলায় চলাচল করবে।
করোনার লকডাউনের পর ৩১ মে থেকে পুনরায় ট্রেন চালু করার দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের বিরতিহীন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছিল। কিন্তু যাত্রীর অভাবে দুই সপ্তাহের মধ্যে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রেনটি পুনরায় চালু করা হচ্ছে। এই দফায় তিনটি কমিউটার ট্রেনও চালু হচ্ছে। এর আগে ১৬ আগস্ট একটি কমিউটার ট্রেন চালু হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে ঢাকা-রাজশাহী পথের গুরুত্বপূর্ণ আন্তনগর ট্রেন সিল্কসিটিও চালু হচ্ছে।
রেলের সব মিলিয়ে ২০০ শতাধিক যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আন্তনগর ট্রেন ৫০ জোড়া। এর প্রায় সবই ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। এখন যেসব ট্রেন চালুর বাকি, এর প্রায় সবই মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন। অবশ্য এই তিন শ্রেণির ট্রেনেই যাত্রী বেশি যাতায়াত করে।
এর বাইরে ঢাকা-কলকাতা পথে একাধিক মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং খুলনা-কলকাতার পথে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। এগুলোও বন্ধ আছে।
তবে ট্রেন বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি এখনো তোলা হয়নি। ট্রেনের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই টিকিটি বিক্রি করা হবে। কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যাবে না। সব টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।
করোনা পরিস্থিতির পর ঢাকা বিমানবন্দর, গাজীপুরের জয়দেবপুর ও টঙ্গী এবং নরসিংদী স্টেশন বন্ধ রয়েছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরববাজার স্টেশনেও কিছু ট্রেন থামছে না। এসব স্টেশনে বেড়া দেওয়াসহ নানা সংস্কার কাজ চলছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি এসব স্টেশন চালু করা হতে পারে।
এসব বিধি-নিষেধের কারণে ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কম বলে রেলের পরিচালন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, অধিকাংশ যাত্রীরই অনলাইনে টিকিট কাটার সুযোগ নেই। তার ওপর কিছু স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রী বেশি হয়—এমন ট্রেন, যেমন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথের কমিউটার ট্রেন, ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া পথের তিতাস কমিউটার চালু করা হচ্ছে না। এতে ট্রেন চালিয়ে খরচই উঠছে না।
টিকিটের নিয়মে শিথিলতা
শুধু অনলাইনে টিকিট বিক্রি এবং একজনের টিকিট দিয়ে অন্যের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গত কদিন ধরেই সমালোচনা হচ্ছে। এই অবস্থায় নিয়ম কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
আজ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলমের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৩ আগস্ট রেলওয়ে কর্তৃক বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে রেলওয়েতে ভ্রমণকারী সম্মানিত যাত্রীসাধারণের ভ্রমণের সময় জাতীয় পরিচয়পত্রসহ ভ্রমণের কথা বলা হয়।
কিন্তু বর্তমানে যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বাধ্যতামূলক জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করার বিষয়টি শিথিল করা হলো। একই সঙ্গে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে পরিবারের সর্বোচ্চ চারজনের টিকিট কেনা ও ভ্রমণ করা যাবে।