আসিয়ানকে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় একসঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে
আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে একযোগে কাজ করতে হবে — এমন আহ্বান জানিয়েছেন CARI ASEAN Research and Advocacy-এর সভাপতি তান শ্রী ড. মুনির মাজিদ। তাঁর মতে, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে যৌথ দায়িত্ববোধ এবং শক্তিশালী আঞ্চলিক সহযোগিতা অপরিহার্য। মঙ্গলবার, বারনামা টিভির “Malaysia at the Heart of ASEAN’s Sustainable Future” শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ৪৭তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন এককভাবে আমাদের টেকসই উন্নয়নের সব সমস্যা সমাধান করবে না। মানুষকে মানুষ, ব্যবসা থেকে ব্যবসা, দেশ থেকে দেশ, সমাজ থেকে সমাজ— এই সংযোগের মাধ্যমেই সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
ড. মুনির জানান, মালয়েশিয়া ইতোমধ্যে আঞ্চলিক পর্যায়ে টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে দৃশ্যমান নীতি ও জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। জাতিসংঘের ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) ১১তম মালয়েশিয়া পরিকল্পনা থেকেই জাতীয় উন্নয়ন কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, সব লক্ষ্য অর্জন সহজ নয়, তবে মালয়েশিয়ার ধারাবাহিক অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে নিয়মিত প্রতিবেদন দেওয়ার মাধ্যমে দেশটির প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট হয়েছে। সম্প্রতি আসিয়ান জ্বালানি মন্ত্রীরা ASEAN Plan of Action for Energy Cooperation 2026–2030 অনুমোদন করেছেন বলে জানান মুনির। তাঁর মতে, এটি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সক্ষমতার পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি উন্নয়নের প্রতি আসিয়ানের যৌথ অঙ্গীকারের প্রতিফলন। তিনি বলেন, “টেকসই জ্বালানি রূপান্তরই আসিয়ানের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।”
২০২২ সালে মালয়েশিয়া তার Energy Transition Framework চালুর মাধ্যমে বৃহৎ পরিসরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন,আমাদের রয়েছে Renewable Energy Transition Roadmap। “আসিয়ানের অন্যতম বৃহৎ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রও মালয়েশিয়াতেই,” যোগ করেন মুনির। তিনি আরও জানান, ক্লাং গেট বাঁধে জলবিদ্যুৎ ও সৌরশক্তির সমন্বয়ে গঠিত হাইব্রিড ফার্ম এবং সারাওয়াকের বিশাল জলবিদ্যুৎ ও সবুজ জ্বালানি প্রকল্প মালয়েশিয়ার অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
এছাড়া, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানি সম্পদ বিনিময় ও সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ASEAN Power Grid গঠনের উদ্যোগও চলমান। এই আঞ্চলিক প্রকল্পের মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলো পারস্পরিকভাবে লাভবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মুনির মাজিদের মতে, টেকসই জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব আসিয়ান অঞ্চলে দেশটিকে অগ্রণী অবস্থানে নিয়ে এসেছে।



