স্বাস্থ্যহাইলাইটস

জাপানি-বাংলাদেশি সার্জনদের উদ্যোগে বিরল হৃদরোগের সফল অপারেশন শিপ হাসপাতালে

জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে এলেন আব্দুল জলিল

জাপানি ও বাংলাদেশি সার্জনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশেই সফলভাবে সম্পন্ন হলো হার্টের একটি বিরল ও প্রাণঘাতী জটিলতা
জাপানি ও বাংলাদেশি সার্জনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশেই সফলভাবে সম্পন্ন হলো হার্টের একটি বিরল ও প্রাণঘাতী জটিলতা

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে এলেন ৩৪ বছর বয়সী যুবক আব্দুল জলিল। রাজধানী ঢাকার অদুরে ঢাকা আশুলিয়া মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শিপ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে জাপানি ও বাংলাদেশি সার্জনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে তার হৃদরোগের এক জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার। এই সাফল্য বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন সাফল্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

পেশাগত জীবনের শুরুতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে গিয়ে আব্দুল জলিল জানতে পারেন তার হৃদপিণ্ডে একটি মারাত্মক সমস্যা রয়েছে। তার হৃদযন্ত্রের রক্তনালী ফুলে, ফেটে গিয়েছিল এবং ভালভ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যা যেকোনো মুহূর্তে তার জীবন কেড়ে নিতে পারতো। এমন এক দুঃসময়ে তিনি চিকিৎসার জন্য শিপ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে যান। এখানে জাপানি বিশেষজ্ঞ ডা. কাজুইউকি ইশিবাশির অধীনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার ভাস্কুলার সমস্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

এই জটিল অপারেশনের নেতৃত্ব দেন ৩০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জাপানি কার্ডিওভাসকুলার সার্জন অধ্যাপক ডা. কাজুইউকি ইশিবাশি। তার সঙ্গে ছিলেন আরেক জাপানি কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. মামিকা মোতোকাওয়া এবং বাংলাদেশের কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. এ এস এম শরিফুল ইসলাম।

ডা. মামিকা মোতোকাওয়া জানান, এই রোগীর ক্ষেত্রে অপারেশনটি ছিল অত্যন্ত জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং। এমনকি জাপানের মতো উন্নত দেশেও এ ধরনের অস্ত্রোপচারে মৃত্যুর হার প্রায় ২০ শতাংশের কাছাকাছি। তা সত্ত্বেও, কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই সফলভাবে অপারেশনটি সম্পন্ন হয়। অপারেশনের মাত্র ১০ দিনের মাথায় সুস্থ হয়ে আব্দুল জলিল হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন।

বাংলাদেশের মানুষের জন্য হৃদরোগে জাপানিজ মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে শিপ ইন্ট্যারন্যনাল হাসপাতাল
বাংলাদেশের মানুষের জন্য হৃদরোগে জাপানিজ মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে শিপ ইন্ট্যারন্যনাল হাসপাতাল

ডা. এ এস এম শরীফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে জাপান অত্যন্ত উন্নত একটি দেশ। তাদের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কার্ডিয়াক সার্জনরা এখন শিপ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে কাজ করছেন। তাদের দীর্ঘ তিন দশকের বেশি অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রোগীদের উন্নত মানের কার্ডিয়াক ও অ্যাওর্টিক সার্জারির সেবা পেতে সাহায্য করছে। জাপানি মানের অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে, যা অপারেশন-পরবর্তী ইনফেকশন বা অন্য কোনো জটিলতার ঝুঁকি কমিয়ে এনেছে।

তিনি আরও বলেন, জাপানি সার্জনদের রোগীদের প্রতি অসীম মমতা ও দায়িত্ববোধের কারণে অপারেশনের পর নিবিড় পরিচর্যা ও সঠিক চিকিৎসায় জটিলতার হার অনেক কম।

শিপ ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালের মাধ্যমে জাপানি সরকার বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে অর্থনৈতিক সহায়তা দিচ্ছে। এর ফলে অ্যাওর্টিক সার্জারির মতো ব্যয়বহুল চিকিৎসা এখন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য সুলভ হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা জাপানি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জন্য উন্নত, নিরাপদ এবং বিশ্বমানের হৃদরোগ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরো দেখুন-   বাংলাদেশে জাপানী হাসপাতাল, চিকিৎসা অপারেশন খরচ এতো কম? 

এমন আরো সংবাদ

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker