দেশভালো সংবাদ

সাড়ে ছয় কোটি টাকার অর্থ দিলো ওয়ার্ল্ড ভিশন

 করোনাকালিন পরিস্থিতিতে ১৮০০০ হাজারেরও বেশি পরিবারকে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার অর্থ সহায়তা দিলো ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ
করোনাকালিন পরিস্থিতিতে ১৮০০০ হাজারেরও বেশি পরিবারকে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার অর্থ সহায়তা দিলো ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ

জুন ১৩,২০২০- করোনাকালিন পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সারাদেশে দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের মাঝে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। ১৮৬৮৪ পরিবারকে এই নগদ অর্থ প্রদান করা হয় । এর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত প্রায় দুমাসের অধিক সময় ধরে লকডাউনের কারনে সংকটে থাকা নি¤œআয়ের মানুষের পরিবারের তাৎক্ষনিক চাহিদা পূরন করা সম্ভব হবে ।

২৭ বছর বয়সী ঢাকার লাবনীর মতো অনেক পরিবারের জন্য করোনা ভাইরাস এক অবর্ননীয় কষ্ট বয়ে এনেছে । ৭,৯ ও ১১ বছরের তিন কন্যা সন্তানের জননী লাবনী কারচুপির কাজ করে প্রতি মাসে উপার্জিত ৪০০০ টাকায় সংসার চালান। কিন্তু লকডাউনের কারেন কাজ হারিয়েছেন তিনি । লাবনী বলেন ‘যদিও আমার আয় খুব কম তবুও এই অল্প টাকায় আমাদের সংসার চলে যেত কোন রকমে। স্বামী ছেড়ে যাবার পর থেকে ৫ বছর ধরে এভাবেই চলছিলো। কিন্তু শেষ তিনমাসে কঠিন সময় পার করছিলাম । অন্য কোথাও কাজও পাচ্ছিলাম না ফলে সন্তানদের দিনে দু’বেলা খাবার জোগাড় করাও ছিল অনেক কঠিন। ওয়ার্ল্ড ভিশন আমাদেও জীবনটা বাঁচিয়ে দিল । আমি বিকাশের মাধ্যমে ৫০০০ টাকা পেয়েছি । যার মাধ্যমে এখন বকেয়া বাড়িভাড়া দিতে পারবো। এছাড়া মেয়েদের জন্য একটু মাছ-মাংসও কিনে খাওয়ানো যাবে । এখন কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।’

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসুচীর পরিচালক সাগর মারান্ডী বলেন এই ধরনের সংকটে শিশুরা নির্যাতন ও শোষনের মতো বিষয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে যে সময় তাদের মানসিক সাহায্য খুব প্রয়োজন। ইবোলা মহামারীর মতো অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে শ্রেনীকক্ষের বাইওে থাকায় শিশুদের প্রতি বাড়ীতে সহিংসতা বিশেষ করে শারিরীক ও যৌন সহিংসতা , বাল্য বিবাহ এবং মানসিক নির্যাতন বেড়ে যায় ।

লাবনীর মতো দেশের শহরাঞ্চলের ২১৬৬ পরিবার ৫০০০ টাকা করে এবং গ্রামাঞ্চলের ১৬,৫১৮ পরিবার ৩০০০ টাকা নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছে ।

সাগর মারান্ডী আরও বলেন “ বাংলাদেশ সরকারে কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধের প্রচেষ্টার পরিপূরক হিসবে এ বছরের এপ্রিল মাসে ওয়ার্ল্ড ভিশন জাতীয় পযায়ে কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসুচী গ্রহন করেছে যার লক্ষ্য হলো জনগনের জীবন রক্ষার উপকরন , সেবা ও তথ্য প্রদান করা। ওয়াল্ড ভিশন সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে তাদের শিশুদের জীবন মানের উন্নয়নে কাজ করে থাকে। কোভিড-১৯ বিস্তারের কারনে অবহেলিত এসকল মানুষের জীবন ও জীবিকায় খুবই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে । কোভিড-১৯ সাড়াদান কর্মসুচী দেশের ২৪ জেলায় ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্ম এলাকায় বাস্তবায়িত হচ্ছে যার মাধ্যমে শিশু , প্রতিবন্ধী মানুষ ,নারী ও শিশু প্রধান পরিবারের চাহিদাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা স্থানীয় সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ কওে উপকারভোগী নির্বাচন করেছি” ।

একটি ব্যাংকের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকরাী সংস্থার সহযোগিতায় উপকারভোগীর মোবাইল ব্যাংক অ্যাউন্টে সহায়তার অর্থ সরসারি চলে যায় । মাত্র ২/৩ দিনের মধ্যে নিরাপদে ও দক্ষতার সাথে পৌছে যাচ্ছে এই সেবা।

“উপকার ভোগী নির্বাচন থেকে অর্থ হস্তান্তরের পুরো প্রক্রিয়াটাই বিভিন্ন সফটওয়্যরের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হয়ে থাকে । প্রথমে ব্যাংকে অর্থ প্রদানের আদেশ দেয় ওয়ার্ল্ড ভিশন , পরে সেই অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারীর কাছে চলে যায়” বলেন সাগর মারান্ডী।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কোভিড-১৯ বিষয়ক সতর্ক বার্তা এবং সাবান , মাস্ক এর মতো হাইজিন সামগ্রী প্রদান করার মাধ্যমে লাবনীর মতো পরিবারগুলোকে ভাইরাস সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। আমাদের সামনের সারির কর্মীরা কমিউিনিটির নেতাদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে শিশু, পিতা-মাতা ও অভিভাবকের ভাইরান সংক্রমন প্রতিরোধি বার্তা দিয়ে যাচ্ছে ।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কোভিড-১৯ বিষয়ক সতর্ক বার্তা এবং সাবান , মাস্ক এর মতো হাইজিন সামগ্রী প্রদান করার মাধ্যমে ফরিদা বেগমের মতো পরিবারগুলোকে ভাইরাস সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে ওয়ার্ল্ড ভিশন ১২৩৩০ পরিবারকে ৮৪৩৬৪০ সংখ্যক হাইজিন কিটস এবং ১৭১৭১৭ পরিবারকে ৬৩৬১১২ সংখ্যক মাস্ক বিতরণ করেছে । আমাদের সামনের সারির কর্মীরা কমিউিনিটির নেতাদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে শিশু, পিতা-মাতা ও অভিভাবকের ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধক বার্তা দিয়ে যাচ্ছে ।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button