
তিনি আরও বলেন, “আমেরিকার সমস্ত পণ্যের দাম বাড়বে এবং তারা উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়ে ভুগবে। তখন তাদের শ্রমিকরা আরও বেশি বেতন দাবি করবে। ফলে তারা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না।” ডা. মাহাথির মাইক্রোচিপের বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মাইক্রোচিপের জন্য কোরিয়া, তাইওয়ান ও মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের ওপর নির্ভরশীল। এই শুল্ক আরোপের কারণে উৎপাদন খরচ বাড়বে এবং আমেরিকান পণ্য আরও দামি হয়ে উঠবে।
বিমান শিল্পের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার মতো দেশ সহজেই আমেরিকান বোয়িংয়ের পরিবর্তে ইউরোপীয় এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি বলেন, “ধরুন, আমরা যদি ৩০টি বোয়িংয়ের বদলে ৩০টি এয়ারবাস কিনি। প্রতিটি বোয়িংয়ের দাম প্রায় ৫০০ মিলিয়ন রিঙ্গিত। ৫০০ মিলিয়নকে ৩০ দিয়ে গুণ করলে যা হয়, আমেরিকা সেই পরিমাণ অর্থ হারাবে।”
গত সপ্তাহে ডা. মাহাথির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, আগামী তিন মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের এই শুল্ক নীতি স্থগিত করতে বাধ্য হবে, কারণ এই পদক্ষেপ তাদের নিজেদের অর্থনীতিকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যুক্তরাষ্ট্র মালয়েশিয়ার অধিকাংশ পণ্যের উপর ২৪ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। এছাড়া, প্রায় ৬০টি দেশের পণ্যের উপর বিভিন্ন হারে শুল্ক এবং সাধারণভাবে সকল দেশের আমদানি পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে, বাণিজ্য আলোচনার সুযোগ দেওয়ার জন্য এই শুল্ক আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
মার্কিন বিশ্বদৃষ্টির সমালোচনা করে ডা. মাহাথির বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে অনেকেই তাদের দেশকে ‘বিশ্ব’ মনে করে এবং অন্যান্য দেশ সম্পর্কে তারা প্রায় কিছুই জানে না। এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রপতিও বিশ্বের বাকি অংশ সম্পর্কে অবগত নন। সম্ভবত সে কারণেই তিনি অন্যান্য দেশের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন।”
সম্প্রতি, মার্কিন রক্ষণশীল ভাষ্যকার বিল ও’রিলি মালয়েশিয়ার জনগণের চীনা পণ্য কেনার সামর্থ্য নেই বলে মন্তব্য করলে মালয়েশিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও’রিলিকে “ঔপনিবেশিক” মানসিকতার অধিকারী বলে অভিহিত করার পর, ও’রিলি আনোয়ারকে উপহাস করেন এবং মালয়েশিয়ার কম মাথাপিছু আয় (৫,৭৩১ মার্কিন ডলার) উল্লেখ করে তার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।