ফিলিস্তিনের জন্য মুসলিম ঐক্যের ডাক সাইয়্যিদ সাইফুদ্দিনের

তুরস্কে অনুষ্ঠিত “ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব সুফি স্কলার্স” আয়োজিত “১২তম আন্তর্জাতিক সুফি সম্মেলন”-এ এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ প্রদান করেছেন মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বর্তমান সাজ্জাদানশীন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সাইয়্যিদ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী। ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে তার ভাষণের মূল বিষয় ছিল “ডিজিটাল প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার: নীতিমালা ও চ্যালেঞ্জ”।
সাইয়্যিদ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী তার বক্তব্যে কুরআনের ভারসাম্যের নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে মুসলিম উম্মাহকে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রজ্ঞাও দায়িত্বশীলতার সাথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “প্রযুক্তি মানবতার সেবা করার জন্য, মানবতাকে বন্দি করার জন্য নয়।” ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সৃষ্ট তথ্য বিভ্রান্তি, গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং নৈতিক অবক্ষয়ের মতো চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে তিনি ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে সত্যবাদিতা ও ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি নৈতিক কাঠামো গঠনের ওপর জোর দেন।
তিনি ডিজিটাল বিশ্বে ব্যবহারকারীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারে শৃঙ্খলা এবং আলেম ও নীতি নির্ধারকদের সমন্বয়ে একটি নৈতিক দিকনির্দেশনা তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
তবে তার বক্তব্যের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ ছিল গাজার চলমান মানবিক বিপর্যয় নিয়ে। আবেগপূর্ণ কণ্ঠে তিনি বলেন, “গাজায় যা ঘটছে তা কোনো সংঘাত নয়, এটি একটি গণহত্যা।”
বিশ্বের ১.৮ বিলিয়ন মুসলমানকে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি গাজার জন্য মুসলিম বিশ্বে একটি জরুরি তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেন, যা মুসলিম দেশগুলোর অর্থনৈতিক সক্ষমতার মাধ্যমে পরিচালিত হবে। একই সাথে, তিনি জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে মুসলিম দেশগুলোকে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তব্য শেষে সাইয়্যিদ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানী গাজার জনগণের জন্য দোয়া করেন। তিনি আল্লাহর কাছে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার, শহীদদের কবুল করার এবং মুসলিম উম্মাহর বিবেক জাগ্রত করার জন্য প্রার্থনা করেন। তুরস্ক সরকারের সহযোগিতায় আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২৫টি দেশের অর্ধশতাধিকের বেশি পণ্ডিত, বুদ্ধিজীবী ও গবেষক অংশগ্রহণ করেছেন।