ট্রান্সফার প্রাইসিং শিখতে পোল্যান্ড যাচ্ছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাঁচ কর্মকর্তা। তারা হলেন আয়কর কমিশনার শাব্বির আহমেদ, প্রথম সচিব শাহ মুহাম্মদ ইত্তেদা হাসান, অতিরিক্ত আয়কর কমিশনার চাঁদ সুলতানা চৌধুরানী, যুগ্ম আয়কর কমিশনার সরদার মো. আবু হেলাল ও অমিত কুমার দাস। তারা আগামী ২৪-২৮ ফেব্রুয়ারি পোল্যান্ডে এ প্রশিক্ষণ নেবেন। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের ১৬ জানুয়ারির এক অফিস আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার ঠেকাতে ২০১২-১৩ অর্থবছরে আয়কর অধ্যাদেশে বেশ কয়েকটি ধারা সংযোজন করে সরকার। এরপর ২০১৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনে ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল গঠনের আদেশ দেয়া হয়। এ আদেশের পরের মাসে সেল গঠনের কথা জানায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু ওই সেল এখনো পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারেনি। এমনকি কোনো মূল্য লুকোচুরির তথ্যও উদ্ঘাটন করতে পারেনি তারা। আয়কর আইনে বলা হয়েছে, কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক লেনদেন যদি বছরে ৩ কোটি টাকার বেশি হয়, তবে সে প্রতিষ্ঠানকে নজরদারি করবে এনবিআরের ‘ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল’। ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলে ওই প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও কাগজপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। এমনকি বিদেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের (সিস্টার কনসার্ন) ব্যবসার ধরনসহ যাবতীয় তথ্যও সংরক্ষণ করতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠান প্রকৃত দাম দিয়েই পণ্য আমদানি করেছে কিনা তা বছর শেষে যাচাই-বাছাই করবে এনবিআর।
প্রতিষ্ঠানটি যে পণ্য আমদানি করেছে সেই পণ্যের ‘আর্মস লেন্থ প্রাইস’ বা বাজারমূল্য নির্ধারণ করবেন কর কর্মকর্তারা। সেটাকে ধরেই পণ্যের শুল্কায়ন করা হবে। আন্তর্জাতিক লেনদেন রয়েছে এ রকম প্রত্যেক ব্যক্তিকে রিটার্নের সঙ্গে আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পর্কিত বিবরণীও দাখিল করতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ইউনিলিভার, দারাজ, হাইডেলবার্গ, ম্যারিকো, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলসহ নয়টি প্রতিষ্ঠান রিটার্নের সঙ্গে আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পর্কিত বিবরণী দাখিল করেছে। এনবিআর তাদের আন্তর্জাতিক লেনদেন পরীক্ষা করছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এমএনসি) নিরীক্ষা শুরু করেছে এনবিআর। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে করফাঁকি দেয়ার কোনো কৌশল অবলম্বন করেছে কিনা–তা শনাক্ত করতেই করা হবে এ অডিট। এর মধ্যে দারাজ, হাইডেলবার্গ ও প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল কোম্পানির আন্তর্জাতিক লেনদেন পরীক্ষা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে কর কর্মকর্তাদের আবেদনের পর ওইসব কোম্পানিকে নোটিসও পাঠানো হয়েছে।