কৃষি

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর: ২০ হাজার নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করছে

চলতি অর্থ বছরে ৩০০০ জনের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে, সেরা উদ্যোক্তাদের জন্য জন্য থাকবে জাতীয় এবং বিভাগীয় পর্যায়ের পুরস্কারের ব্যবস্থা

ছবি: কৃষি বিপণন অধিদপ্তর
ছবি: কৃষি বিপণন অধিদপ্তর

গাজীপুর সদরের উদ্যোক্তা তামিমা আক্তার ন্যান্সি। কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো করায় এটাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তামিমা আক্তারের স্বামী একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করলেও এখন কাজ ছেড়ে দিয়ে তার ব্যবসায় মনোযোগী হয়েছেন।

তামিমা আক্তার বলেন, ‘আমার এ উদ্যোক্তা হওয়াটাকে পরিবারের সবার নিকট থেকে অনেক সার্পোট পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমি অফিস তৈরি করেছি। ব্যবসার জন্য টিআইএন, ট্রেড লাইসেন্স করেছি। বিপণনের যে লাইসেন্সগুলো হয় সবগুলো করেছি।’ তিনি আরো বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি। আমি সেখানে ট্রেনিং নিয়ে একজন স্বাবলম্বী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে তৈরি করেত চাই।’ তামিমা আক্তার ন্যান্সিই নয়, উদ্যমী ও তরুণদের আয়বর্ধন কাজে নিয়োজিত করতে দেশব্যাপী উদ্যোক্তা তৈরির কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

সারা দেশে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচালাল এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপ এন্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার-ডিএএম অংগ)’ প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ২০ হাজার তরুণ এবং নারী কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি কাজ করছে সরকার। চলতি বছর সারাদেশে ৩ হাজার নারী ও পুরুষকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের ৮টি বিষয়ে ১২ দিনের অন দ্যা জব প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। হাতে কলমে প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য সরকারি/বেসরকারি কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে পার্টনার (ডিএএম অংগ) প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

ছবি: কৃষি বিপণন অধিদপ্তর
ছবি: কৃষি বিপণন অধিদপ্তর

এ ছাড়াও প্রকল্প হতে ৫টি কৃষিপণ্য যেমন; আলু, আম, কাঁঠাল, টমেটো এবং সুগন্ধি চাল এর ভ্যালু চেইন প্রমোশনাল বডি গঠন করা হবে। ইতিমধ্যে ভ্যালুচেইন প্রমোশনাল বডির নীতিমালা কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। এ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়নে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে ৭শ ৬০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পার্টনার (ডিএএম অংগ) এর এজেন্সি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ড. মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-ফারুক বলেন, ‘চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৩ হাজার উদ্যোক্তাকে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি উপকরণ এবং কৃষি যন্ত্রপাতি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোঃ মাসুদ করিম বলেন, ‘উদ্যোক্তারা শুধু নিজে স্বাবলম্বী হয় না তারা সমাজের আরও দশ জনকে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়। বিশ্ব অর্থনীতিতে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হতে হলে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদেরও বিভিন্ন নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা নিয়ে কাজ করে সেগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।’ ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে কৃষিকে আধুনিক ও সম্মানজনক পেশায় পরিণত করা সম্ভব হবে। প্রশিক্ষণ নেওয়া উদ্যোক্তারা তাদের প্রাণচাঞ্চল্য, কর্মস্পৃহা এবং জীবনী শক্তি দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবেন,’ বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৫ বছরে ২০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি করবে। যার মধ্যে ৬০ শতাংশ নারী ও ৪০ শতাংশ পুরুষ। অর্থাৎ ১২ হাজার মহিলা ও ৮ হাজার পুরুষ উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। উদ্যোক্তাদের বয়স পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এবং নারীদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button