মালয়েশিয়ায় শোষণের শিকার বাংলাদেশীদের মামলা গড়াচ্ছে মার্কিন আদালতে
২৫১ জন বাংলাদেশি কর্মরত ছিলেন, মালয়েশিয়ার কাওয়াগুচি ম্যানুফ্যাকচারিং এসডিএন বিএইচডি কোম্পানীতে। যারা গত বছর সাত মাস বেতন না পেয়ে চরম দুর্দশার শিকার হন।
৮ জানুয়ারি, ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শোষণের শিকার বাংলাদেশি কর্মীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি-তে দুই শীর্ষস্থানীয় জাপানি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করছেন। তবে এফএমটি কোম্পানিদুটির নাম প্রকাশ করেনি।
শ্রমিকরা এই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে শোষণ, দুর্ব্যবহার এবং বেতন না দেওয়ার অভিযোগে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন, স্বাধীন অভিবাসী শ্রমিক অধিকার কর্মী অ্যান্ডি হল।
অ্যান্ডি হল আরও জানান, শ্রমিকরা গত বছরের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইনজীবী টেরেন্স পি কলিংসওয়ার্থকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তার মাধ্যমে তারা ক্ষতিপূরণ, আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করবেন। মামলার প্রক্রিয়াটি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং এটি আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করা হতে পারে।
হল জানান, শ্রমিকরা ইতোমধ্যে ২৭ ডিসেম্বর টোকিওতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার কাছে দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছেন।
তবে কোম্পানিগুলো গঠনমূলকভাবে সহযোগিতা না করায় বিষয়টি আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোম্পানিগুলো প্রতিজন শ্রমিককে মাত্র ২০,০০০ রিঙ্গিত প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছিল, যা শ্রমিকদের নেওয়া ঋণ এবং নিয়োগ ফি-সহ অন্যান্য খরচ মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। অনেক শ্রমিক এখনো বিশাল ঋণের বোঝা নিয়ে সংগ্রাম করছেন এবং ঋণদাসত্বের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর কাওয়াগুচি, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য একটি চুক্তি করেছে, যা ২০২৫ সালের নভেম্বরের মধ্যে কার্যকর হতে পারে। তবে শ্রমিকরা সেই অর্থ আদায়ের বিষয়ে সন্দিহান।
এর আগে শ্রমিকরা পোর্ট ক্লাং কারখানার বাইরে বিক্ষোভ করেন এবং বকেয়া বেতনের দাবি জানান। শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে ৩০ ডিসেম্বর ২৫১ জন কর্মীদের মধ্যে ১৬০ জন বাংলাদেশি কর্মীকে ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন নতুন কোম্পানির অধীনে ডিপার্টমেন্ট অব লেবারের মাধ্যমে নিয়োগকর্তা পরিবর্তন করে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাকি কর্মীদের দুই কর্ম বিসের মধ্যে হস্তান্তরের কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট দফতর এখনও তা করতে পারেনি। এ ছাড়া লেবার কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কর্মীদের মধ্যে যারা দেশে ফিরতে ইচ্ছুক, তাদের কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় চলতি মাসে দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়।
অ্যান্ডি হল বলছেন, শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে। শ্রমিকদের এই মামলাটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে দাঁড়াতে পারে।