পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন
মৌমাছি চাষ ও মধু উৎপাদনে অবদান রাখায় আট ব্যক্তিকে মৌ পদক প্রদান, দেশে মধুর বার্ষিক বাজার ১২০০-১৫০০ কোটি টাকাসচেতনতা বৃদ্ধি, সমাজে প্রচলিত মধু বিষয়ক ভুল ধারণা দূরীকরণ, গবেষক, চাষি, উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তার সেতুবন্ধন ও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো পঞ্চম জাতীয় মৌমাছি ও মধু সম্মেলন।
মৌমাছি ও মধু জোটের আয়োজনে ও গৃহস্থালি খাদ্য উৎপন্নকারী প্রতিষ্ঠান ঘরের বাজারের পৃষ্ঠপোষকতায় ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ রাজধানীর ইনস্টিউটশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি)-তে এই সম্মেলন হয়। এর আগে এই সম্মেলন দেশের বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলন উদ্বোধন করেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। এসময় বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট মহাপরিচালক ড. কবির উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খুলনার নিরাপদ খাদ্য অফিসার মো. মোকলেছুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজন থেকে দেশে মৌমাছি চাষ ও মধু নিয়ে কাজ করায় আট ব্যক্তিকে মৌ পদক দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বিসিকের সাবেক প্রকল্প পরিচালক, মৌচাষ প্রকল্প খোন্দকার আমিনুজ্জামান বিসিকের মহাব্যবস্থাপক মো: আলী আশরাফ খান; জগদীশ চন্দ্র সাহা, সাতক্ষীরার প্রবীণ মৌ পালক মো. আইয়ুব আলি গাজী, সিরাজগঞ্জের প্রবীণ মৌ পালক মো. চাঁন মিয়া সরকার এবং টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডক্টর আবু নাসের মহসিন হোসেন।
এছাড়াও ঘরের বাজার এর পরিচালক ও সিইও মো. নাজমুস সাকিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তৈরি পোশাক ও মাছের মতো মধুও বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নিবে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও উজ্জ্বল করবে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন মধু গবেষক সৈয়দ মো. মঈনুল আনোয়ার ও মৌমাছি ও মধু জোটের আহ্বায়ক মো. এবাদুল্লাহ আফজাল। সৈয়দ মো. মঈনুল আনোয়ার বলেন মৌমাছি ও মধু জোটের মাধ্যমে দেশে মধুর অবস্থান যাতে আরো শক্তিশালী হয়, এই কামনা করছি। আমাদের দেশে মধু খাঁটি নাকি ভেজাল সেটি চেনার জন্য এখনও খুব ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। সেগুলো নিয়েও আমাদের অনেক কাজ করার রয়েছে।
সম্মেলনে ঘরের বাজারের কর্মকর্তারা জানান, দেশে এখন প্রতিনিয়তই মধুর চাহিদা ও বাজার বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মধুর বার্ষিক বাজারমূল্য আনুমানিক ১২০০-১৫০০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক ও চাষ থেকে মধু সংগ্রহ হয়েছে ২০-২৫ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে অবশ্য চাষের মধু ৯০-৯৫ ভাগ। বাকিটা প্রাকৃতিক। এখন অনেকেই মধু বিদেশেও রপ্তানি করছে। তবে দেশে এখনো মধু পক্রিয়াজাতকরণে এবং সংগ্রহে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা কম। কিছু উদ্যোক্তা সেগুলো নিয়েটও কাজ করছেন।