এ প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি ডলার সরাসরি ইলোন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে আসবে। বর্তমানে এ প্রযুক্তি উদ্যোক্তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৬ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। তিনি বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি, যার সম্পদের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। দুবাইয়ে বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ার পরিকল্পনা করছেন টেসলা ও এক্সের মালিক ইলোন মাস্ক। এ প্রতিষ্ঠানে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার বৈশ্বিক মেধাবীরা কাজ করবেন। এমন প্রকল্প পরিকল্পনা বিষয়ে সম্প্রতি অ্যারাবিয়ান বিজনেসকে জানিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ এ ধনীর বাবা এরোল মাস্ক।
উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পটির নাম হবে ‘দ্য মাস্ক ইনস্টিটিউট’। এতে মাধ্যাকর্ষণ ও নিউক্লিয়ার ফিউশনসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয়ে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। স্থানীয় প্রতিভা ধরে রেখে বৈশ্বিক ‘ব্রেন ড্রেইন’ বা মেধা পাচার সমস্যার সমাধানে যুক্ত হবে প্রতিষ্ঠানটি।
সম্প্রতি ব্যবসায়িক সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) গিয়েছিলেন এরোল মাস্ক। সেখানে স্থানীয় উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা এবং ইনস্টিটিউট স্থাপনের সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেন তিনি। এরোল মাস্ক বলেন, ‘দুবাই বিশ্বের কেন্দ্রস্থল হওয়ায় এখানে আমরা এমন একটি বিজ্ঞান একাডেমি প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যা সেরা ও ব্যতিক্রমী মেধাগুলোকে একত্রিত করে কাজের সুযোগ দেবে।’ তিনি আরো জানান, দুবাই একটি মডেল সিটি হলেও এখানে ‘ব্রেন ড্রেইন’ বড় একটি সমস্যা। এর আর্থিক ক্ষতিও বিশাল আকারের।
এরোল মাস্ক জানান, ‘দ্য মাস্ক ইনস্টিটিউট’ শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি মাস্ক পরিবারের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। ২০০১ সালে মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স চালুর পর থেকে তিনি ও ইলোন মাস্ক এ পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করে আসছেন। এরই মধ্যে আর্থিক সংস্থান ও পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী বছর ইনস্টিটিউটটির নির্মাণ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরোল মাস্ক আরো বলেন, ‘যখন আমি ইলোনের সঙ্গে এ ইনস্টিটিউট নিয়ে আলোচনা করি, ও ধারণাটি পছন্দ করে এবং বলে, আমাদের এখনই এটি করতে হবে, না হলে অন্য কেউ করে ফেলবে।’
প্রকল্পের পরিকল্পনায় রয়েছে একটি অত্যাধুনিক তিনতলা ভবন, যেখানে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য আবাসন সুবিধা থাকবে। উদ্ভাবনী মনোভাবের প্রতীক হিসেবে ভবনটিতে একটি বার্গার-ডিসপেনসিং মেশিন সংযুক্ত করা হবে, যা মাস্ক পরিবারের ব্যতিক্রমী চিন্তাধারার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এর বাইরেও এই ইনস্টিটিউট নিয়ে বড় ধরনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে। এরোল মাস্ক সেদিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘ইনস্টিটিউটটি নোবেল প্রাইজের মতো পুরস্কার দেয়ার সমতুল্য হবে। আমরা একটি মাস্ক প্রাইজ তৈরি করব।’ এ প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি ডলার সরাসরি ইলোন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদ থেকে আসবে। বর্তমানে এ প্রযুক্তি উদ্যোক্তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৬ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। তিনি বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি, যার সম্পদের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এরোল মাস্কের মতে, ইলোনের উদ্যোগগুলোর মূল্য প্রচলিত তথ্যের তুলনায় আরো বেশি হতে পারে। শুধু স্পেসএক্সের মূল্য ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে।