বিদেশ

নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন জীবনমানের পরিবর্তন সৈয়দ হামিদ আলবার

মালয়েশিয়ামালয়েশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনীতিবিদ  তান শ্রী ড. সৈয়দ হামিদ আলবার বলেছেন, নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন জীবনমানের পরিবর্তন। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। পরিশ্রমী জনগণের প্রচেষ্টায় দেশটি সবদিক থেকেই এগিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সামনে পুনর্গঠনের বিরল সুযোগ করে দিয়েছে। টেকসই গণতন্ত্রের জন্য আয় ও সম্পদের বৈষম্য কমিয়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর জোর দিতে হবে জানিয়ে তানশ্রী হামিদ আলবার বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

গতকাল (৭ ডিসেম্বর) রাজধানী  কুয়ালালামপুর গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে মুসলিম ওয়ার্ল্ড রিসার্চ সেন্টার এবং ইনস্টিটিউট অব পলিসি, গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক অবস্থা এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে এর প্রভাব নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন তিনি।

মুসলিম ওয়ার্ল্ড রিসার্চ সেন্টার এর প্রেসিডেন্ট ও  ওআইসি ষ্টাডি গ্রুপের সেক্রেটারি জেনারেল, ড. ইশারফ হোসেন এর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আলবার বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ একটি বিপ্লবী পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এবং এই মুহূর্তে দেশটির সামনে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার জন্য অত্যন্ত দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রয়োজন। মানুষ এখন আর অতীতে ফিরে যেতে চায় না। তারা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখে এবং এখনই তার উপযুক্ত সময়। কিন্তু এটি কেবল আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের জীবনমানের পরিবর্তন আনতে হবে।

মালয়েশিয়ারবাংলাদেশের ইতিহাস, বিশেষত ১৯৭১ সালের যুদ্ধের স্মৃতি, জাতীয় পরিচয়ের মূল ভিত্তি। এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন করার এখনই সময়। আসিয়ানে যুক্ত হওয়ার জন্য কেবল আলোচনা নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপ প্রয়োজন। একটি আধুনিক এবং গতিশীল বাংলাদেশ গড়তে আন্তর্জাতিক ফোরামে শক্তিশালী উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে হামিদ আলবার বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নয় প্রত্যন্ত আঞ্চলের জন্য সমস্যা। এ ক্ষেত্রে সার্কের পুন: সক্রিয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচিৎ সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা।

সভাপতির বক্তব্যে  ড. ইশারফ হোসেন  বলেন,  বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যোগ্য নেতৃত্বে অচিরেই বাংলাদেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ সংসদীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের নতুন যাত্রা, পূর্ণাঙ্গ সুশাসন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত হলে তা শুধু বাংলাদেশের জনগণের জন্যই কল্যাণকর হবে না, তা অবশ্যই আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রে আসিয়ানের সাথে বাংলাদেশের কার্যকরী সম্পর্ক স্থাপনে ইতিবাচ হবে। মালয়েশিয়াকে  বাংলাদেশের ভাতৃপ্রতিম বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও যেকোনো ভু রাজনৈতিক  কৌশলগত প্রয়োজনে আসিয়ান অবশ্যই বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মালয়েশিয়ার সাবেক মিনিস্টার এন্ড ডেপুটি স্পিকার, সেন্টার ফর নিউ ইনক্লুসিভ এশিয়ার চেয়ারম্যান, তান শ্রী অং তে কেয়াত, আইসিস মালয়েশিয়ার প্রাক্তন ফেলো মি: বান নেগারা, ইউনিভার্সিটি অফ মালায়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. রয় এ্যান্তনি রোজার, সিঙ্গাপুর নান ইয়াং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড.এম সাইদুল ইসলাম, ইসলামিক এনজিও অ্যাসোসিয়েশন মালয়েশিয়ার পেসিডেন্ট ও ন্যাশনাল ইন্টারফেইথ কাউন্সিলের সদস্য জামাল বিন শামছুদ্দিন, এমডব্লিউসির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর দাতো বাহার উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button