কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলার রিকতা আখতার বানু বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরলেন।তিনি বিবিসির ২০২৪ সালের ১০০ অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
বিবিসি গতকাল (৩ ডিসেম্বর) বিশ্বের ১০০ জন অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। রিকতা আখতার বানু বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিভাগে স্থান পেয়েছেন। তার পরিচিতিতে তাকে নার্স ও স্কুল প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিকতা কুড়িগ্রামের লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। এ স্কুলের কার্যক্রমের কারণেই তিনি বিবিসির এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
স্কুলটি প্রাথমিকভাবে অটিস্টিক বা শেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এখন এটি বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতা থাকা শিশুদের সেবা দিচ্ছে।
রিকতার নিজের মেয়েও অটিস্টিক এবং সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। ২০০৯ সালে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েকে ভর্তি করানোর পর তিনি নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েন।
রিকতা বলেন স্কুলে ভর্তি করার পর শুরু হয় বিপত্তি। দৃষ্টিমণি কারো সাথে খারাপ আচরণ করেছিল। এ কারণে স্কুল থেকে তাকে এক শিক্ষক বের করে দেন। এরপর মেয়ে স্কুলে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ওঠে। কিন্তু শিক্ষকেরাও তাকে স্কুলে নিতে চান না। কারণ সে প্রতিবন্ধী অন্যদের সাথে খারাপ আচরণ করে।আমি চাকরি করি। শিফটিং ডিউটি। আমার স্বামীও একটি কলেজে চাকরি করেন। সব মিলে মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম। মেয়ের কারণে অন্য কারও বাড়িতে দাওয়াতও খেতে পারি না। অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।
একদিন আমার মেয়ে কামড়ে আমার হাতের চামড়ায় আঘাত করে। তখন খুব মন খারাপ হয়েছিল। অনেক ব্যথা পেয়েছিলাম। সেদিন আমিও ওকে একটু মেরেছিলাম। তখন আমি ভাবছিলাম, মেয়েসহ আমি মরে যাব। বেঁচে থাকব না। ওই রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। ভোরে মাথায় চিন্তা আসে, তাদের নিয়ে স্কুল করার।
তিনি আরো জানান সেইদিন সকালে তিনি তার স্বামী মো. আবু তারিক আলমের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বলেন বাড়ির পাশের জমিটা তাকে দিতে। সেখানে তিনি স্কুল করবেন, মেয়েকে পড়াব। ওই স্কুলে সকালে তিনি পড়াবেন। আর বিকেলে হাসপাতালে কাজ করবেন।