নারীদের হাতের তৈরি ব্যাগ যাচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকায়
শিল্পী রানী ও ফাতেমা বেগম, কাজ করেন সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজেস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখানে নিজের হাতে চট ও কাপড়ের ব্যাগ বানান তারা।এসব ব্যাগ আবার রপ্তানি হয় ইউরোপ আমেরিকায়। এ কাজে ভাগ্য ঘুরেছে তাদের। জমি কেনা, সন্তানদের শিক্ষিত করার মতো কঠিন কাজও সহজে করতে পারছেন তারা।সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজেস নামে প্রতিষ্ঠানটি নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের গোলাহাট এলাকায়।এ প্রতিষ্ঠানে যেসব নারী কাজ করেন তারা সবাই প্রায় স্বাবলম্বী। এ প্রতিষ্ঠানে সব নারীই কারিগর, আবার সবাই মালিক।সবাই মিলে তৈরি করেন চটের আকর্ষণীয় ব্যাগ। স্ক্রিন প্রিন্ট থেকে প্যাকেজিং সবকিছুই করেন।ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজেসে তৈরি ব্যাগগুলো রপ্তানি হয়। এ থেকে যে আয় হয়, সেখান থেকে বছর শেষে লভ্যাংশ পান নারী কর্মীরা।নারীরা ছাড়াও এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করে হাতে গোনা কয়েকজন পুরুষ কর্মী। তারাও এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন। সংসার চালিয়ে কিছু সঞ্চয় করছেন। সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন বেশ।
১৯৯৫ সালে গড়ে ওঠে সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজেস। ছয়তলা ভবনটি অসহায় ও দুস্থ নারীদের জমাকৃত অর্থে নির্মিত। সমাজের অবহেলিত নারীরা এখানে কাজ শুরুর আগে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করতেন। সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজেসের নারী কর্মীর সংখ্যা ১৬০। সময় ধরে নিজ প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর ঘরেও কিছু নিয়ে যান। বাড়ি বসে তৈরি করেন বিভিন্ন রঙের-ঢঙের ব্যাগ। এসব ব্যাগ তৈরির মজুরি হিসেবে দৈনিক অন্তত ৬০০ টাকা আয় করেন।
শিল্পী রানী ও ফাতেমা বেগম নতুন বাবুপাড়া থেকে এসে সৈয়দপুর এন্টারপ্রাইজেসে কাজ করেন। তারা জানান, এখানে কাজ করে তাদের সংসার বেশ ভালো চলছে। বছর শেষে ভালো লভ্যাংশ মেলায় জমি-জমি কেনা ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াও করাতে পারছেন। প্রতিনিয়ত কাজ থাকে বিধায় পারিশ্রমিকও নিয়ম মতো পেয়ে থাকেন। তারা নিজেরাই এ প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারী, ফলে এনজিওর ঋণ নিতে হয় না।
প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী ব্যবস্থাপক আরমান আলী বলেন, এখানে বাজার ব্যাগ, লন্ড্রি ব্যাগ, ডল ব্যাগ, লাঞ্চ ব্যাগ, কসমেটিক ব্যাগসহ পুরনো শাড়ি কাপড়ের ব্যাগ তৈরি করেন নারীরা। ব্যাগগুলো মজবুত, টেকসই ও উন্নতমানের।
প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী ব্যবস্থাপক আরমান আলী বলেন এখানে বাজার ব্যাগ, লন্ড্রি ব্যাগ, ডল ব্যাগ, লাঞ্চ ব্যাগ, কসমেটিক ব্যাগসহ পুরনো শাড়ি কাপড়ের ব্যাগ তৈরি করেন নারীরা। ঢাকা থেকে উন্নতমানের পাটের চট সংগ্রহ করে এসব ব্যাগ তৈরি করা হয়। অর্ডার অনুযায়ী ব্যাগগুলো আমেরিকা, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ড, জাপান, কোরিয়া, হংকং, তাইওয়ান, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়।
রিপোর্টঃ নাজমুল হুদা