পৃথিবী বাঁচাতে নতুন নীতি ঘোষণার তাগিদ ড. ইউনূসের
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে একটি প্রস্তাবনা তুলে ধরে এটিকে তার একটি স্বপ্ন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বলেছেন ‘আমি আশা করি আপনারা এই স্বপ্ন দেখায় আমার সঙ্গে যোগ দেবেন। আমরা যদি একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি তবে তা বাস্তবে তা রূপান্তর করা সম্ভব ।
জলবায়ু বিপর্যয় থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে প্রস্তাবিত নীতিতে ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’ নীতিতে জীবনধারা গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৯-এ বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত আসন্ন দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচতে হলে এখনই মানুষকে পাল্টাতে হবে। যে নীতিতে শান্তিতে নোবেল জিতেছেন জলবায়ু সম্মেলনে সেই নীতির ওপর ড. ইউনূসের দেয়া এ ভাষণ তুমুল হাততালিতে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিশ্ব নেতারা।
২৯তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে এবার এসেছেন ৮০টিরও বেশি দেশের সরকার প্রধান। তবে যাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা সেই যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ভারতের মতো দেশগুলোর রাষ্ট্র প্রধানরা যোগ দেননি। এ আয়োজন নিয়ে আগ্রহও কম ওইসব দেশের অংশগ্রহণকারীদের। এমন ঘটনাকে নেতিবাচক ধরে নানা সমালোচনাও হচ্ছে সম্মেলনের নানা প্যাভিলিয়নে।
উদ্বোধনের দ্বিতীয় দিন দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ অভিঘাত থেকে বাঁচতে কার্বনশুন্য পৃথিবী গড়ার কোন বিকল্প নেই। এটা মানুষকেই কমাতে হবে। জীবনযাত্রার পরিবর্তন এনে এমন পৃথিবী গড়তে হবে যেখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি থাকবে না, শুধু পুনঃনবায়নযোগ্য শক্তি থাকবে। এ নিয়ে প্রাথমিকভাবে একটি সামাজিক ব্যবসার ধারণাও দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলনে ‘সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের জীবন কেবল সুরক্ষিতই হবে না, গুণগতভাবে উন্নত হবে। এটি যুবকদের জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার পথ তৈরি করবে। প্রস্তাবিত নতুন এই জীবনধারা চাপিয়ে দেয়া নয় পছন্দের সাথে বেছে নেয়ার কথাও জানান তিনি।
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে নিজের এই প্রস্তাবনা কে তার একটি স্বপ্ন বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা এই স্বপ্ন দেখায় আমার সঙ্গে যোগ দেবেন। আমরা যদি একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি তবে তা বাস্তবে তা রূপান্তর করা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
অধিবেশনের ভাষণের পরে সম্মেলন কেন্দ্রের প্যাভিলিয়নে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউএনডিপির একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। জলবায়ুর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলায় বিশেষায়িত কর্মসূচি শুরুর তাগিদ এ অনুষ্ঠানে দেন তিনি।