মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যটন ও সংস্কৃতি সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশ গ্রহণ
মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যটন ও সংস্কৃতি প্রদর্শনী এবং সম্মেলনে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। কুয়ালালামপুর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৩ থেকে ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক পর্যটন ও সংস্কৃতি প্রদর্শনী এবং সম্মেলন (ইন্টাক) ২০২৪-এ বাংলাদেশ ছাড়াও অংশ নিয়েছে ২০টিরও বেশি দেশ। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় ১১ টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৪ দিন ব্যাপী এ আয়োজন। মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশন পরিচালিত বুথের মাধ্যমে বাংলাদেশের দর্শনীয় পর্যটন স্থান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং উল্লেখযোগ্য রপ্তানীপণ্য সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আগত বিদেশী দর্শনার্থীদের মাঝে তুলে ধরা হচ্ছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ার বিভিন্ন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক চেম্বার ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের এই মেলা পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে। মালয়েশিয়ার পাশাপশি এই আয়োজনে অংশ নেয়া দেশের মধ্য থেকে ছয়টি দেশ তাদের দেশীয় সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী উপস্থাপন করবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এর অংশ হিসেবে আগামী ৬ অক্টোবর রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৪৫ মিনিটে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি দল বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিবশেনা তুলে ধরবে বলে হাইকমিশন থেকে জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যটন ও সংস্কৃতি প্রদর্শনী এবং সম্মেলনের উদ্বোধন করেন, মালয়েশিয়ার পর্যটন ও সংস্কৃতি ডেপুটি মিনিস্টার খাইরুল ফেরদৌস আকবর খান। এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যটন ও সংস্কৃতি প্রদর্শনী এবং সম্মেলনের চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো: আফিক হাসান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন ষ্টল পরিদর্শন করেন পর্যটন ও সংস্কৃতি ডেপুটি মিনিস্টার খাইরুল ফেরদৌস আকবর খান ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। বাংলাদেশ হাইকমিশনের বুথে ডেপুটি মিনিস্টারসহ অন্যান্যদেরকে স্বাগত জানান মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর। তিনি এসময় উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থান সম্পর্কে অবহিত করেন এবং এসংক্রান্ত বই ও তথ্য প্রদান করেন। এ সময় ছিলেন, মাদানি রিসার্চ সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজমি, অ্যাসোসিয়েশন অব বুমিপুটেরা ট্যুরিজম অপারেশন অফ মালয়েশিযার প্রেসিডেন্ট ওয়ান মুহাম্মাদ আদম এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার ট্যুরিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুর শুহাদাহ মোহাম্মদ, বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) সুফী আব্দুল্লাহিল মারুফ এবং প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও দেশটির প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর উপস্থিত প্রবাসী সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি জানান যে, হাইকমিশন এর উদ্যোগে এই মেলায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে বিদেশীদের কাছে বাংলাদেশের পর্যটনস্থানসমূহকে পরিচিত করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক বিষয়াদি সম্পর্কেও তারা জানতে পারবেন। মালয়েশিয়া তথা আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য ও সেবাকে পরিচিত করার লক্ষ্যে হাইকমিশন নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করে আসছে এবং গত ৪ মাসে ৮টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বলেও তিনি জানান।
মালয়েশিয়ার পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, হস্তশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন, ল্যাংকাউই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, মালয়েশিয়ান টিম্বার ইন্ডাস্ট্রি বোর্ড, বুমিপুটেরা ট্যুরিজম অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ মালয়েশিয়া, কনভেনশন ও এক্সিবিশন ব্যুরো (মাইক্যাব) এবং কুয়ালালামপুর সিটি হল (ডিবিকেএল) যৌথ সহায়তায়, চারদিনের সম্মেলনে সমৃদ্ধ কনফারেন্স সেশনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক প্রসারিত এবং মালয়েশিয়ার টেকসই পর্যটন-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আদান-প্রদান করা।
উল্লেখ্য যে, গত দুই বছরে ভ্রমণ ও পর্যটন খাতে উল্লেখযোগ্য উত্থানের পর, ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। ২০২৩ সালে, মালয়েশিয়া ২০.১ মিলিয়ন পর্যটক এসেছেন। যা থেকে এ খাতে ৭১.৩ বিলিয়ন রিঙ্গিত রাজস্ব আয় করেছে দেশটি। এই বছর, দেশটি ২৭.৩ মিলিয়ন পর্যটকের লক্ষ্য রাখছে, পর্যটন রাজস্ব থেকে ১০২.৭ বিলিয়ন রিঙ্গিত আয়ের আশা করছে দেশটি।