‘আম্মাজান’ সুপারহিট হওয়ার পরও যে কারণে সিনেমা ছেড়েছিলেন শবনম
ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় ও কালজয়ী সিনেমা ‘আম্মাজান’। কিংবদন্তি অভিনেতা ও নির্মাতা কাজী হায়াতের নির্মিত এই সিনেমায় নায়কের চরিত্রে ছিলেন মান্না। আর সিনেমার নাম ভূমিকা তথা আম্মাজানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী শবনম। এই সিনেমায় শবনমের অভিনয় দাগ কেটেছে কোটি দর্শকের মনে। তাকে দিয়েছে অসামান্য জনপ্রিয়তা।
আজ গুণী অভিনেত্রী শবনমের জন্মদিন। ১৯৪০ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার আসল নাম ঝর্ণা বসাক। শৈশবে বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নাচ শেখেন তিনি। অসাধারণ নাচের দক্ষতা অর্জন করে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। এক অনুষ্ঠানে শবনমের নৃত্য দেখে তাকে সিনেমায় নাচের সুযোগ করে দেন বরেণ্য নির্মাতা এহতেশাম। একইসঙ্গে আরও কিছু সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
কিন্তু আম্মাজানের মত একটি কালজয়ী সিনেমা এবং হৃদয়ে দাঁগ কাটার মতো চরিত্র করেও পরবর্তীতে আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি ‘আম্মাজান’ খ্যাত শবনমকে। কিন্তু কেন? এ নিয়ে কখনো সরাসরি তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তবে বছর দুয়েক আগে শিল্পী সমিতির ইফতার পার্টিতে হাজির হয়ে তিনি জানিয়েছিলেন সেই অজানা কথা। শবনম বলেন,
‘আম্মাজান’ করার পর ভালো কোনো চরিত্র পায়নি। তাই ক্যামেরার সামনেও দাঁড়াইনি। ইচ্ছা থাকলেও মনের মতো চিত্রনাট্য ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর কাজ করা হয়নি।’
অনুষ্ঠানে নিজের একটি লিখিত বক্তব্যও পড়ে শোনান শবনম। সেখানে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ অভিনয় জীবনে আপনাদের যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে আমি কৃতজ্ঞ। দুই দশকের বেশি সময় সিনেমার বাইরে, তারপরও আপনারা আমাকে মনে রেখেছেন, এটাই আমার অনেক বড় প্রাপ্তি। বহুদিন পর সিনেমার মানুষের কাছে এসে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে চিরঋণী হয়ে থাকব।’
খ্যাতিমান এই অভিনেত্রী প্রকৃত নাম ঝর্ণা বসাক। তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অভিনয় জগতে তিনি শবনম নামে পরিচিত। এই নামে তাকে মুসলিম ধর্মের মনে হলেও আসলে তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, যেটা হয়তো অনেকেরই অজানা। নব্বইয়ের দশক থেকে শবনম বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার আগে কাজ করতেন পাকিস্তানি সিনেমায়।