গাড়িতে উঠলে বমি-মাথা ঘোরানোর সমস্যা? সমাধান যেভাবে
অনেকেই বাস কিংবা গাড়িতে উঠলে শরীরে অস্বস্তি ও বমি বমি ভাব দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে কেউ আবার বমি করেও ফেলেন। কারও আবার সমতলে তেমন সমস্যা না হলেও, পাহাড়ের চড়াই-উতরাই পথে গাড়ি চললেই শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে। বমি পায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একেই বলা হয় ‘মোশন সিকনেস।’ কেন হয় এই সমস্যা? এ বিষয়ে ভারতীয় চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, চোখ, কান ও মস্তিষ্কের সমন্বয় চলাফেরার ও কাজকর্মের জন্য জরুরি। কোনো কারণে এই সমন্বয় বিঘ্নিত হলে ‘মোশন সিকনেস’ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বমি হয়ে যায়। এই সমন্বয়ের কাজটি করে ভেস্টিবিউলার সিস্টেম। কানের ভিতরে থাকে ‘ভেস্টিবিউলার অ্যাপারেটস’। কারও ক্ষেত্রে তা বেশি সংবেদনশীল হয়, কারও কম। এই সিস্টেমে ছন্দপতন হলে সমস্যা দেখা দেয়।
বমির সমস্যা সমতলে, পানিতে, আকাশে— যে কোনো জায়গায় হতে পারে। সাধারণত, দোদুল্যমান কোনো কিছুতে চড়লেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। সমাধানের উপায়? অরিন্দম বলেন, ‘মোশন সিকনেসের জন্য নানা ধরনের ওষুধ রয়েছে। প্রোমেথাজিন থিওক্লেট, প্রোক্লোরপেরাজিন জাতীয় ওষুধ খেলে বমি হবে না।’ কিন্তু, ওষুধ খেলেও অনেক সময় বমি হয়। তখন?
সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ হচ্ছে– ওষুধের কাজ করার জন্য অন্তত ৪-৬ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। ওষুধ খেয়েই গাড়িতে উঠলেই হবে না। যদি বমি হয়ে যায়, তাহলে আরও একটি ওষুধ খেতে হবে।
এ ছাড়া গাড়িতে ওঠার সময় ভরা পেটে খাওয়া বা খালি পেটে থাকা কোনোটাই ঠিক নয়। ভাজাভুজি বা মসলাদার খাবার খেয়ে উঠলেও সমস্যা বাড়তে পারে। গাড়িতে বসে মোবাইল দেখা, বই না পড়াই ভাল। চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম করলেও কাজ হবে।
টোটকা
বমি বন্ধ করার জন্য অনেকে অনেক রকম পরামর্শ দেন। যেমন, মুখে লবঙ্গ রাখা, লেবু পাতা বা কর্পূরের ঘ্রাণ নেওয়া ইত্যাদি। তবে, যাদের বমির সমস্যা হয়, তারা যদি গাড়ির জানালাটা কিছুক্ষণ খোলা রাখেন, তাহলে বাইরের হাওয়ায় স্বস্তিবোধ করবেন। পাহাড়ে গিয়ে এ ধরনের সমস্যা হলে মাঝেমধ্যে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় ৫ মিনিট করে বিশ্রাম নিলেও শরীর ভাল লাগবে।