প্রবাস

প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুদানে ফিলিস্তিনিরা পেল কুরবানীর গোশত

আফছার হোসাইন (মিশর-থেকে)
গাজায় টানা আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আক্রমণে মানুষের পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছে বহু গবাদি পশু, অনাহারেও মারা গেছে অনেক। এর ফলে চলতি বছর ফিলিস্তিনে ছিল কোরবানির পশুর তীব্র সংকট। ইসরাইলিরা গাজার মুসলমানদের ধর্মীয় কর্তব্য পালনেও  বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবছর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গাজায় যত সংখ্যক কোরবানির পশু দরকার ছিল, তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।  যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে কুরবানীর পশুর মুল্যও ছিল অতীতের তুলনায় আকাশচুম্বী।
রাফা সহ সব কয়টি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়ে কোরবানির পশু প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেছিল ইসরাইল। কোরবানির পশু প্রবেশের ওপর ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঈদুল আজহা উদযাপন এবং ইসলামী ধর্মীয় অনুশীলনের অংশ হিসেবে কোরবানি করার সুযোগ থেকে এবছর বঞ্চিত হয়েছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার হাজারো মুসলিম পরিবার।
এই অবস্থায় গৃহহীন স্বজনহারা বাস্ত্যচ্যুত
 গাজাবাসীকে কুরবানীর এক টুকরো গোশত খাওয়াতে এগিয়ে আসলো আমেরিকা ভিত্তিক প্রবাসী বাংলাদেশীদের মানবিক সংগঠন আশ ফাউন্ডেশন ইউএস এইনক।
বাংলাদেশের এনজিও সংস্থা আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন প্রবাসীদের পাঠানো অনুদান দিয়ে ফিলিস্তিনে একটি মানবিক সংস্থার সহযোগিতায় ঈদের দিন ৫টি পশু কুরবানী করে গাজার খান ইউনিসের আল মায়াউশি ও রাফা’য় আল ক্বারারা উদ্বাস্তু শিবিরে অবস্থানরত শরনার্থীদের মাঝে বিতরণ করে কুরবানী করা পশুর গোশত।
 মানবিক সংস্থা দুটির স্বেচ্ছাসেবীগণ গাজা বাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে‌ ঈদের কিঞ্চিৎ আনন্দ দিতে কুরবানীর গোশত গুলো তাঁবুতে তাঁবুতে গিয়ে পৌঁছিয়ে দেয়। এ সময় অসহায় ফিলিস্তিনের উদ্বাস্তুরা বাংলাদেশী আশ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন,
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বাংলাদেশের আশ ফাউন্ডেশন গত নভেম্বর থেকে গাজায় জরুরী খাবার, পানি, সৌর বিদ্যুত প্রকল্প, মসজিদ নির্মাণ, টয়লেট স্থাপন সহ বিবিধ মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে করে আসছে। এরি ধারাবাহিকতায় পবিত্র ঈদুল আজহার  দিন নির্যাতিত অসহায় গাজাবাসীর মাঝে অন্তত এক টুকরো গোশত উঠিয়ে দেয়ার এক চ্যালেঞ্জিং কর্মসূচী হাতে নিয়েছিলাম। মহান আল্লাহ আমাদের দয়া করেছেন। অতি উচ্চমূল্যে হলেও আমরা বেশ কিছু অসহায় গাজাবাসীর ঘরে ঘরে কুরবানীর গোশত পৌঁছে দিয়ে এই কর্মসূচি সম্পন্ন করতে পেরেছি, এজন্য আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় অন্তত ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ। টানা আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আক্রমণে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতিতে ভুগছে গাজার লাখো মানুষ।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button