নগরীর দরিদ্র মানুষকে সম্পৃক্ত না করে শুধু উচ্চবিত্তদের জন্য নগর পরিকল্পনা করায় অনেক প্রকল্পই বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারনে বহু তোড়জোর করলেও ২০৪১ সালের মধ্যেও পূর্বাচল নতুন শহর বসবাসযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন এমিরেটাস অধ্যাপক, নগর পরিকল্পনা ও ভূগোলবিদ নজরুল ইসলাম।
রাজধানীর ডেইলি স্টার মিলনায়তনে সেন্টার ফর এটমসফেরিক পলিউশন স্টাডিজ- ক্যাপস, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাসনলেজ-বারসিক এবং কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবান পুওর- সি ইউ পি আয়োজিত জাতীয় এক সংলাপে এসব তুলে ধরা হয়। সংলাপে বলা হয়-রান্নার খোলা চুলা থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া ও দুষণে বাংলাদেশে বছরে অন্তত ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। যা বিশ্ব সংস্থাগুলো তাদের গবেষণা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নিরাপদ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত না করলে অসুখ ও মৃত্যু বাড়তেই থাকবে বলেও জানান তারা।
ক্যাপস চেয়ারম্যান ও পরিবেশবিদ ডক্টর আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে সংলাপে অংশ নেন- আইএবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মাহমুদ আলী নকি, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিষ্টস ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব, বারসিকের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সিইউপি’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা ও রাজধানীর বিভিন্ন বস্তির প্রতিনিধিরা। ধনী-দরিদ্র সবার জন্যই দেশে সুষম ও পরিবেশ সম্মত উন্নয়ন নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ইন্টারন্যাশন্যাল জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ জার্নালে ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ঘরের ভেতরে খোলা চুলায় রান্নার কারণে সেখান থেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অতি সূক্ষ্ম কণা, কার্বন মনোক্সাইড ও কার্বন ডাই–অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, সালফার ডাই–অক্সাইড, বেনজিনসহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বাতাসে দুষণ ছড়ায়। এ কারণে, ২০১২ সালে বিশ্বে প্রায় ৪৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ খোলা চুলায় রান্না করেন বলে গবেষণায় দেখা যায়। ফলে দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের মধ্যে অন্তত ৩ দশমিক ৬ শতাংশ রোগী এই দুষণ থেকেই অসুস্থ হচ্ছেন।