ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে চিত্র প্রদশর্নী
বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে স্যার ফজলে হাসান আবেদের ৮৮তম জন্মদিন উদযাপন
চিত্র প্রদর্শনী এবং বৃক্ষরোপণসহ একাধিক কর্মসূচীর মাধ্যমে স্যার ফজলে হাসান আবেদ, কেসিএমজি এর ৮৮তম জন্মদিন উদযাপন করেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। ১৯৩৬ সালের ২৭ এপ্রিল হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাংলাদেশ ও বিশ্বের উন্নয়নে স্যার ফজলের অসামান্য অবদান এবং তাঁর জীবন-দর্শন তুলে ধরতে রোববার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪ মেরুল বাড্ডায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিবিশন গ্যালারিতে স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। স্যার ফজলের কর্মময় জীবনের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলোকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরাই ছিল এই আয়োজনের উদ্দেশ্য।
স্যার ফজলের স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে সমাজের তৃণমূল মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে তাদের সাথে কাটানো সময় এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রাপ্ত অসংখ্য সম্মাননা গ্রহণের মূহুর্তগুলো এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে। এসব স্থিরচিত্রের মাধ্যমে শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীরা তাঁর কর্মময় জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আরো গভীরভাবে জানার সুযোগ পেয়েছেন।
রোববার সকালে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ ল্যাঙ্গুয়েজেসের সিনিয়র ডিরেক্টর লেডি সৈয়দা সারওয়াত আবেদ। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ বলেন, “এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা স্যার ফজলের অবদান স্মরণ করছি। তাঁর দেখানো পথই হোক আমাদের চলার পাথেয় আজকের দিনে সেটাই আমাদের কামনা।”
লেডি সৈয়দা সারওয়াত আবেদ বলেন, “স্যার ফজলে ছিলেন নিরাহংকারী এবং অত্যন্ত বিনয়ী একজন মানুষ। তিনি মানুষের জন্য এবং সবাই যেন মানসম্মত শিক্ষালাভ করতে পারে সে লক্ষ্যে আজীবন কাজ করেছেন। এই নতুন ক্যাম্পাস তার স্বপ্নের একটি বাস্তবায়ন। তিনি এমন একটি ক্যাম্পাস তৈরি করতে চেয়েছিলেন যেখানে শিক্ষার্থীরা অসাধারণ এক্সপেরিয়েন্স লাভ করতে পারে।”
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পরিবেশবান্ধব নতুন ক্যাম্পাস পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীকারে প্রতীক। স্যার ফজলে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাসকে এমনভাবে তৈরি করেছেন যাতে শিক্ষার্থীরা এখান থেকে পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা লাভ করেন। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন, সেই সাথে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তন এবং দেশব্যাপী চলমান তাপপ্রবাহ রুখতে জনসচেতনতা সৃষ্টির অংশ হিসেবে স্যার ফজলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ। সেই সাথে স্যার ফজলকে নিয়ে আয়োজিত চিত্র প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেন তিনি। এই সময় ট্রাস্টি বোর্ডের অন্য সদস্যবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে। দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়নে এশিয়া এবং আফ্রিকার ১১টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ব্র্যাক। নিরন্তর নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, বিশ্বমানের পাঠদান, গবেষণা এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশে উন্নত-আধুনিক ও সমৃদ্ধ শিক্ষাব্যস্থা গড়ে তুলতে ২০০১ সালে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন উন্নয়নের এই প্রবাদপুরুষ।