হিরো অফ দি ডে

‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা গ্রহণ করলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ভারতে কতবার গেছেন, তার কোনো হিসাব নেই। পড়াশোনার জন্যও এই শিল্পী একটা লম্বা সময় দেশটিতে ছিলেন। কয়েক দশক ধরে তো পেশাদারিভাবে গান গাইতে যাচ্ছেন। কিন্তু তাঁর এবারের ভারত–যাত্রার প্রসঙ্গটা একেবারেই অন্য রকম—সম্মানের, গৌরবের এবং আবেগেরও। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই তা টের পেয়েছেন তিনি। কারণ, তাঁর এবারের যাত্রার সময় নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘পদ্মশ্রী পদকপ্রাপ্ত শিল্পী’। ভারত সরকার বাংলাদেশের রবীন্দ্রসংগীতের বরেণ্য এই শিল্পীকে এ বছর পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে পুরস্কারটি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার হাতে তুলে দেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।

রবীন্দ্রসংগীতের বরেণ্য শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরীর বন্যা ভারত সরকারের পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন, খবরটি প্রথম জানা যায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি নৈশভোজেও অংশ নেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। তারই ফাঁকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় বন্যার। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই রোমাঞ্চিত। আনন্দিত এবং সম্মানিত বোধ করছি। বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে পুরস্কারটা আমার কাছে ভীষণ গর্বের মনে হচ্ছে।’ পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্রহণ করতে দিল্লির উদ্দেশে গত রোববার ঢাকা ছাড়েন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এবারের যাত্রার অভিজ্ঞতাটা একেবারে ভিন্ন রকম বলে জানালেন তিনি

কথায়–কথায় রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বললেন, ‘যাত্রা শুরুর পর থেকেই দারুণ সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছি। আমি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে এলাম, কর্তৃপক্ষ আমাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দিল্লির হোটেল পর্যন্ত সম্মানিত অতিথি হিসেবেই তারা নিয়ে এসেছে। সব জায়গায় আমাদের পদ্মশ্রী অ্যাওয়ার্ডি, পদ্মশ্রী অ্যাওয়ার্ডি বলছে! এত আতিথেয়তা, এত সম্মান—সবকিছু আমার জীবনে একটা জ্বলজ্বলে অনুভূতি হয়ে থাকবে। মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা।’

রাষ্ট্রপতি ভবনে পদ্মশ্রী পদকপ্রাপ্তি অনুষ্ঠানে ভারতের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বন্যা জানালেন, আগামী মাসে আবার দিল্লিতে যাবেন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। অন্য সময় যে ধরনের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন, এটি তেমনটা নয় বলে জানালেন। পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্তি উপলক্ষে প্রথমবার ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়া হয়েছে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার। সেই প্রসঙ্গ তুলে এনে এই শিল্পী বললেন, ‘রাষ্ট্রপতি ভবনে যাওয়ার ব্যাপারটাও আলাদা একটা অভিজ্ঞতা। এর আগে কোনো দিন যাওয়া হয়নি। রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার নেওয়া—সবকিছু মিলিয়ে দারুণ ব্যাপার ঘটে গেল।’

বন্যার পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্তি বাংলাদেশের সংগীতকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নেবে এবং শিল্পীদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করবে। আগামী প্রজন্ম বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে আশার আলো ছড়াবে বলেও মনে করছেন তিনি। বন্যা বললেন, ‘শুধু রবীন্দ্রসংগীত নয়, আমাকে সংগীতের জন্য দেওয়া হয়েছে এই পুরস্কার। আমার জন্য ভালো লাগার ব্যাপার যেমন, তেমনি অন্যরাও ভীষণ অনুপ্রাণিত হবে। বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে এখন দারুণ সব কাজ হচ্ছে। সামনে আরও অনেক ভালো কাজ হবে। আমাদের তরুণেরা তো দারুণ আশা দেখাচ্ছে, অসাধারণ সব কাজ করছে। এই তরুণদের নিয়ে আমার আশাবাদ অনেক বেশি। তারা অনেক দূর এগিয়ে নেবে। যাত্রা চলমান থাকবে। ভবিষ্যতে আরও ভালো ভালো কাজ হবে।’

পদ্মশ্রী পুরস্কার পাবেন, কোনো দিন ভাবেননি বাংলাদেশি এই সংগীতশিল্পী। জীবনে এমন দিন কখনোই আসেনি। আসবে কীভাবে! ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার যে জীবনে প্রথমবার উঠল তাঁর হাতে। জানুয়ারিতে পুরস্কারের তালিকাটা প্রকাশের পর থেকেই একের পর এক শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসে বরেণ্য এই শিল্পীর মুঠোফোন। অনেকে সশরীর শুভকামনা ও অভিনন্দন জানাতে যান তাঁর লালমাটিয়ার সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারা’ কার্যালয়ে। কেউ আবার তাঁর বাড়িতে ছুটে যান প্রিয় শিল্পীর সম্মাননাপ্রাপ্তির খবরটি সামনাসামনি উদ্‌যাপন করতে।

এমন আরো সংবাদ

Back to top button