দেশসেরা স্থপতিদের আলোচনায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাস
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেছেন দেশের অন্যতম সেরা স্থপতিবৃন্দ। সোমবার, ১৯ মার্চ ২০২৪ স্থপতিদের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে আমন্ত্রণ জানায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ আর্কিটেকটার অ্যান্ড ডিজাইন। পরিদর্শনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত বৈশিষ্ট্য এবং টেকসই ফিচার, আধুনিক উপাদান, বিভিন্ন ধরণের স্পেস এবং নান্দনিক বিষয়সমূহ কাছ থেকে দেখেছেন এবং উপলব্ধি করেছেন আমন্ত্রিত স্থপতিরা। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন বিষয় তাদের কৌতুহল বাড়িয়েছে। অনন্য ডিজাইন কৌশলের কারণে এই ক্যাম্পাস বাংলাদেশের স্থাপত্য শিক্ষায় ও পেশায় ভবিষ্যত সহায়তা এবং উদ্ভাবনের ভিত্তি রচনা করবে।
স্থপতিদের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে দেখান ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ আর্কিটেকটার অ্যান্ড ডিজাইন এর ডিন প্রফেসর ফুয়াদ হাসান মল্লিক, ডিপার্টমেন্ট অফ আর্কিটেকচার এর চেয়ারপারসন জায়নাব ফারুকী আলী এবং প্রজেক্ট আর্কিটেক্ট শফিকুল ইসলাম। এই সময় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ আর্কিটেকটার এর ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রদর্শনী ঘুরে দেখার মধ্য দিয়ে এই ক্যাম্পাস পরিদর্শনপর্ব শুরু হয়। এরপর ছাদে অবস্থিত বিশালাকার খেলার মাঠ, জগিং ট্র্যাক, অত্যাধুনিক ক্লাসরুম-ল্যাব, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, মাল্টিপারপাস হল, ক্যাফেটেরিয়া, বায়োটোপসহ পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি উৎসর্গকৃত সবগুলো ফিচার ঘুরে দেখেন স্থপতিরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটারে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস নির্মাণের বিভিন্ন ধাপ তুলে ধরেন প্রজেক্ট আর্কিটেক্ট শফিকুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের গল্প এবং স্যার ফজলে এই ভবন নির্মাণের ভাবনা এবং অনুপ্রেরণা কীভাবে পেয়েছেন সেটা তুলে ধরেন প্রফেসর জায়নাব ফারুকী আলী। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন ফিচারের ভাবনা এবং এর কার্যাবলী স্থপতিদের সামনে তুলে ধরেন প্রফেসর ফুয়াদ হাসান মল্লিক।
প্রফেসর জায়নাব ফারুকী আলী বলেন, “স্যার ফজলে এমন একটা ক্যাম্পাস চেয়েছিলেন যেটা হবে পরিবেশবান্ধব, ভবিষ্যতমুখী এবং আধুনিক। শিক্ষার্থীরা গর্ব করতে পারে এমন একটা ক্যাম্পাসই তিনি বানাতে চেয়েছিলেন। আমরা গর্বিত যে, তেমনই একটা ক্যাম্পাস আমরা বানাতে পেরেছি, যেখানে স্পেস গুলোতে রয়েছে সফ্ট আলো, আর প্রচুর বাতাস।”
প্রফেসর ফুয়াদ হাসান মল্লিক বলেন, “এই ক্যাম্পাসের সবখানেই পরিবেশ সংরক্ষণের একটা ছাপ আছে। ক্রস ভেন্টিলেশন, হাইব্রিড কুলিং সিস্টেম, গাছপালা দিয়ে বেষ্টিত সবুজ চাদর দিয়ে এই ক্যাম্পাসটাকে ঠাণ্ডা রাখা হচ্ছে। সৌরশক্তি ব্যবহার করে আমরা প্রয়োজনীয় শক্তির ২৩ শতাংশ বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করছি। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে পানির ৪০ শতাংশের প্রয়োজন মিটবে। ক্যাম্পাসের ৫০ শতাংশ জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে যেখানে ইনফরমাল লার্নিং হবে। সর্বোপরি, এই ক্যাম্পাস আমাদের সবসময় মনে করিয়ে দেবে যে, পড়াশোনার মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনের পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের বিশাল একটি দায়িত্ব রয়েছে।”
এই অনুষ্ঠানে একটা মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস বাংলাদেশের সবার জন্য একটি উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন আর্কিটেক্টরা। তারা বলেন, স্থাপত্যের দিক থেকে এই ভবন একটি বিস্ময়, যা ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থী ও স্থপতিদের জন্য একটি রেফারেন্স হয়ে থাকবে।