দিনাজপুরের হিলিতে প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে সুপার ফুড কেনোয়া। পাশাপাশি চিয়া সিডের চাষও করছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা শামীম খান। তার দেখাদেখি স্থানীয় কৃষক নতুন ফসল চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। নতুন এ ফসল চাষাবাদে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। হিলির বোয়ালদার গ্রামের শামীম খান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেন। চাকরি নেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। সেখান থেকে যোগ দেন বেসরকারি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে। কিন্তু মন না বসায় চাকরি ছেড়ে ফিরে আসেন বাড়ি। যোগ দেন কৃষিকাজে। ব্ল্যাক রাইচ বা কালো ধানের পর এবার তিনি শুরু করেছেন উত্তর আমেরিকার সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত কেনোয়া চাষ। এর পাশেই আবাদ করেছেন মেক্সিকোর মরু অঞ্চলের ফসল চিয়া সিড। পঞ্চগড় থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৪২ শতাংশ জমিতে এসব আবাদ করেছেন তিনি। এরই মধ্যে ফসল কাটতে শুরু করেছেন। কাটা-মাড়াইয়ের পর প্যাকেটজাত করে তা বিক্রির জন্য সরবরাহ করা হবে দেশের সুপার শপগুলোয়। প্রতি কেজি কেনোয়ার দাম ৬০০-৮০০ টাকা। মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে সরিষা চাষের মতো একই পদ্ধতিতে রোপণ করতে হয় কেনোয়া ও চিয়া সিড। ফসল ঘরে তোলা যায় ৬০-৭০ দিনের মধ্যে। প্রতি বিঘায় ফলন হয় তিন-চার মণ।
কৃষি উদ্যোক্তা শামীম খান বলেন, ‘এ অঞ্চলে প্রথমবারের মতো কেনোয়া ও চিয়া সিড আবাদ করেছি। দুটি ফসলই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। কেনোয়া আমিষ, কার্বোহাইড্রেড ও ফাইবারে ভরপুর একটি খাবার। আর চিয়া সিডও সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত। প্রথমবারের মতো ৪২ শতক জমিতে কেনোয়া ও চিয়া সিড চাষে আমার খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকার মতো। যে ফলন হয়েছে, তাতে উৎপাদিত ফসলের দাম হবে ৫০ হাজার টাকা।’
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, ‘ফসল দুটির জীবনকাল স্বল্প। বোরো ও রোপা আমনের মধ্যবর্তী সময়ে চাষ করা যায়। জীবনকাল কম হওয়ায় সরিষা থেকেও ১০ দিন আগাম এ ফসল উঠানো যায়। যেকোনো একক ফসলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ফসলের বৈচিত্র্যতাও দরকার আছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য কেনোয়া ও চিয়া সিড উপযোগী ফসল। তবে ফসল দুটি নতুন হওয়ায় প্রথমে স্বল্প পরিসরে করে চাষ করা যেতে পারে। এতে সফল হলে পরবর্তী সময়ে পরিসর বড় করা যাবে। কেনোয়া ও চিয়া সিড ভেষজ এবং ঔষধিগুণসম্পন্ন হওয়ায় ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীর জন্য উপকারী।’